ভালোবাসার মোহে পরিবার, সমাজ ও দেশ ছেড়েছিল শাম্মি। সেখানে কঠিন সব দিন পাড়ি দিয়েও নিজের কাছে ধরে রাখতে পারে না ভালোবাসার মানুষটিকে। স্বামীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে শর্তের মুখে পড়ে। একসময় ছাড়তে হয় স্বামী, সংসার। পরিবারের অমতে বিয়ে করায় বাবা-মা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল আরো আগেই। প্রবাসের একাকী জীবনে শেষ সম্বল হয়ে থেকে যায় প্রাণপ্রিয় সন্তান খুশবু। সেই সন্তানকে নিয়েও একসময় শুরু করতে হয় আইনী লড়াই। মা হিসেবে শাম্মি কতটুকু যোগ্যতা রাখে তার সন্তানের দায়িত্বপ্রাপ্ত হতে? বারবার এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তাকে। প্রেমিকা, স্ত্রী, পুত্রবধু চরিত্রগুলো থেকে সম্পূর্ণরূপে বেরিয়ে আসে এক প্রত্যয়ী মা। মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্লান্ত, অবসাদগ্রস্ত হলেও সন্তানের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্নবোধক পরিস্থিতি তাকে করে তোলে সাহসী ও সংগ্রামী। শাম্মির পদক্ষেপ শুরুতে একাকী হলেও চলার পথে সে পেয়ে যায় কিছু সহৃদয়বান মানুষ, যাদের মধ্যে সর্বাগ্রে ছিল শাহান। গুটিকয়েক মহৎপ্রাণ মানুষের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহায়তায় চলতে থাকে ওর সন্তানের অধিকার পাওয়ার লড়াই। সন্তানকে নিজের কাছে রাখার লড়াইতে বের হয়ে আসে নানা অপ্রত্যাশিত ও অজানা সব তথ্য। এক পর্যায়ে জানতে হয় সে প্রতারিত, কারো ব্যক্তিগত স্বার্থপরতার শিকার। সিঙ্গেল প্যারেন্টিং জীবনের নানা টানাপোড়েনের সাথে এসে যোগ হয় আরো এক অধ্যায়, অদৃশ্যমান সব অনুভূতি। যাদের নাম ভয়, চিন্তা, অস্বস্তি, অনিশ্চয়তা, ঘৃণা। শেষ পর্যন্ত কী হয় শাম্মির মাতৃভাগ্যে? খুশবুর কাস্টডি কে পায়? যাকে নিয়ে লড়াই, সেই খুশবুর দিনকাল কীভাবে কেটেছে এই লড়াইয়ের দিনগুলোতে? মায়ের লড়াই শেষে সন্তান হিসেবেই বা কেমন ছিল সে?
তাসনুভা সোমা একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশী লেখক। তার জন্ম, পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর ঢাকা শহরে। এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে। মাতৃভূমি ছেড়ে বিলেতে আসার পর উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন ব্যবসায়িক প্রশাসনে। এছাড়াও ডিপ্লোমা করেছেন বেশ কয়েকটি বিষয়ে। সন্তান ও পারিবারকে সময় দেয়ার উদ্দেশ্যে এক সময় সরে আসেন কর্মজীবন থেকে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিলেতে বসবাস করলেও, বাংলা ভাষার প্রতি অপরিসীম টান থেকে বাংলায় সাহিত্য চর্চা করে গেছেন নিয়মিত। ছোটবেলা থেকেই লেখার অভ্যাস তার। তবে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ২০১৯সালে। শখ থেকে তার লেখার শুরু এবং লিখছেন সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়। পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখা ছাড়াও লিখছেন উপন্যাস, ছোটোগল্প, বড়গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা ও ভ্রমণ কাহিনি। লেখকের পছন্দের বিষয়ের মধ্যে আছে মানবজীবন ঘেষা ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং অর্থনীতি। লিখতে ভালবাসেন চারপাশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, ইতিহাস, মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না নিয়ে। বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে তার লেখা দেড় শতাধিক কলাম ছাড়াও ছাপা হয়েছে ভ্রমণ কাহিনি, ছোট গল্প ও প্রবন্ধ।