কবীর রানা শূন্য দশকের প্রতিশ্রুতিশীল গল্পকার। সিরিয়াসধর্মী লেখার প্রতি আগ্রহী। তাঁর গল্পের স্বর নিজস্ব। গল্পকথনের ধরন এবং বুনন রীতিতে তিনি খণ্ড খণ্ড অসংখ্য ঘটনার সমাবেশ ঘটিয়ে আখ্যানের প্রেক্ষাপট বিস্তৃত করে দেন; যেখান থেকে পাঠক প্রয়োজনানুসারে ঘটনাগুলো নিজের মতো সন্নিবদ্ধ করে নিতে পারেন। তিনি সাধারণত ঘটনার ধারাবাহিক বিবরণ বা বিবৃতি দেন না; আপাত বিচ্ছিন্ন ঘটনা অথবা চিন্তারাজির অভ্যন্তরীণ ঐক্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে কবীর রানার গল্পদেহ। তাঁর গল্পের ভাষারীতি সংহত এবং প্রয়োজন মাফিক পরিমিত। ছোট ছোট অথবা কখনো দীর্ঘ বাক্যবন্ধে তিনি ঘটনার এতটাই ঘন পিনদ্ধ বর্ণনা করেন, যা প্রায়শই কাব্যময় হয়ে ওঠে। কবীর রানার গল্পে বিষয়বৈচিত্র্য যেমন আছে তেমনি গল্পের কলেবরে উঠে আসা চরিত্রগুলোর আছে বাস্তবতা। তবে তাঁর গল্পের পাত্রপাত্রীরা প্রায়শই পরাবাস্তবতা এবং জাদুবাস্তবতার জগতে পরিভ্রমণ করে। আণবিক পৃথিবীতে মানব সভ্যতায় যন্ত্র নির্ভর অমানবিকতায় আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ব্যক্তির যাপিত জীবনের পরিবৃত্তে কবীর রানা গল্পের বিষয়-উপাদান আবিষ্কার করেন এবং সচেতন দক্ষতায় তা শৈল্পিক ব্যঞ্জনায়মূর্ত করে তোলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, কবীর রানা বাংলাদেশের গল্পজগতে সমকালের সম্ভাবনাময় গল্পকার।
কবীর রানা'র জন্ম ১৯৬৮, কুষ্টিয়ায়। বাবা আবদুল করিম, মা সুফিয়া খাতুন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন পাবনা ক্যাডেট কলেজে। ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করছেন। লেখেন বিভিন্ন লিটলম্যাগে। সম্পাদিত লিটলম্যাগ নিজকল্পা। প্রকাশিত গল্প গ্রন্থ জল আসে মানুষের দীঘিতে, মানচিত্রকর, আমাদের গ্রামে একটা পাখিচোর আছে