লোকটাকে সবাই ঘিরে ধরেছিল আর কেউ-কেউ বলছিল, বিদেশি-বিদেশি! কিন্তু কোন্ বিদেশের সেটা তার চেহারা দেখে আঁচ করা মুশকিল। হতে পারে ইউরোপিয় কিংবা মার্কিন, এমনকি ইরানি বা কাশ্মিরি ব্রাহ্মণও হওয়া সম্ভব। তখন কিছুকাল আগেকার কথা সুবর্ণদ্বীপের লোকেদের মনে পড়ে। দূর থেকে একটা লোককে দেখে তারা চিৎকার করেছিল বিদেশি-বিদেশি বলে। আবার অনেকেই চেঁচাতে থাকে 'খিরিস্টান খিরিস্টান' বলে। তারপর যখন দুপুর সকলের মাথার ওপরে হেলে পড়তে থাকে, লোকটা পকেট থেকে একটা গোলাকার টুপি বের করে মাথায় লাগিয়ে পশ্চিমমুখি নামাজ পড়তে শুরু করলে তারা তাদের ভুল বুঝতে পারে। শেষে জানা গেল লোকটা এসেছিল চেচনিয়া নামের একটা দেশ থেকে। চেচনিয়া বললেই আগে লোকে চিনতো না। কিন্তু দ্বীপের অনেকেই শিক্ষিত আর বিশ্ব এখন যখন সকলের হাতের মুঠোয় তারা জানে চেচনিয় নামের লোকেরা এককালের বিশাল এক সাম্রাজ্যকে কাঁপিয়ে দিয়েছে ভয়ংকরভাবে। তাই তারা অপেক্ষা করে। তবে এই লোকটা ঠিক চেচনিয়টার মত নয়। সে বাংলা ভাষা জানে। অন্তত কাজ চালাবার মত কিছু শব্দ ও বাক্য তার জানা থাকায় সে তাকে ঘিরে ধরা লোকেদের স্মিত বলে, স্লামালেকুম, আপনাদের সকলের ওপর শান্তি বরষিত হউক।
মহীবুল আজিজ জন্ম ১৯ এপ্রিল ১৯৬২, নড়াইল, যশাের। ' পিতা : মােহাম্মদ আজিজউল্লাহ, মাতা : জোহরা কোহিনূর। পিতার আদিনিবাস লক্ষ্মীপুর। বর্তমানে চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।। গল্প-উপন্যাস-কাব্য-প্রবন্ধ-গবেষণা-অনুবাদ ইত্যাদি মিলিয়ে তার চল্লিশের অধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বাড়ব এবং যােদ্ধাজোড় তার দুটি উপন্যাস। উল্লেখযােগ্য গল্পগ্রন্থ গ্রাম উন্নয়ন কমপ্লেক্স ও নবিতুনের ভাগ্যচাদ, দুগ্ধগঞ্জ, মুক্তিযুদ্ধের গল্প এবং তপন শীল ও। তার বিবাহ প্রকল্প; কাব্যগ্রন্থ সান্তিয়াগাে’র মাছ, পৃথিবীর সমস্ত সকাল, ট্যারানটেলা এবং 'হৃদয় বর্ণের কবিতাগুচ্ছ; প্রবন্ধ-গ্রন্থ। সৃজনশীলতার সংকট ও অন্যান্য বিবেচনা, ' অস্তিত্বের সমস্যা এবং লেখালেখি এবং উপনিবেশ-বিরােধিতার সাহিত্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ। হাসান আজিজুল হককে নিয়ে লেখা | তার গবেষণা-অভিসন্দর্ভ গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় হাসান আজিজুল হক : রাঢ়বঙ্গের উত্তরাধিকার শিরােনামে। বাংলাদেশের খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেনের তত্ত্বাবধানে রচিত তাঁর পিএইচ-ডি গবেষণার গ্রন্থবদ্ধ শিরােনাম বাংলাদেশের উপন্যাসে। গ্রামীণ নিমবর্গ নােবেল বিজয়ী পােলিশ-মার্কিন ঔপন্যাসিক আইজাক বাশেভিস সিঙ্গারের শােশা উপন্যাসটি তিনি বাংলায় অনুবাদ করেছেন। বর্তমানে তিনি ' চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং সভাপতি হিসেবে কর্মরত।