‘মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং স্বাধীন দেশ দেখে গেলেন ইমনের মা। কিন্তু স্বাধীন দেশে নিজের বাসায় আর জীবিতাবস্থায় ফিরতে পারলেন না। শেষ নিশ্বাস ত্যাগের পর মায়ের মরদেহটা ইমন সেই কম্বলটি দিয়ে ঢেকে দেয়, যে কম্বলটি সে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছিল। এছাড়া কি-ই বা ছিল তার? মাকে নেয়া হয় শ্মশানে। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র ক’দিনের ব্যবধানে মাকে হারালো ইমন! এ পর্যায়ে এসে ইমন চৌধুরী বলে, মায়ের কথা এখনো খুব মনে পড়ে। মা! পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ, সুন্দর এবং পবিত্র একটি শব্দ। যা কিনা মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং এই দেশ মাতৃকার মতই যথাক্রমে বিশাল, মহান এবং সুন্দর। একাত্তরে মাকে হারিয়েছি সত্য, তবে পেয়েছি স্বাধীনতা এবং মানচিত্র। আমার মায়ের স্মৃতির সাথে জড়িয়ে যায় এদেশের জন্মকথাও। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং এদেশটাই এখন আমার মা।’ ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অবলম্বনে রচিত কিশোর উপন্যাসটি নিছক কোনো ডকু-ফিকশন নয়। আশার করা যায়, এটি এমন একটি ফিকশন হয়ে উঠেছে, যা কিশোর উপযোগী পাঠকসহ সব শ্রেণীর পাঠকের উপন্যাস পাঠের আনন্দ দেবে। পাশাপাশি ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কেও ধারণা দেবে।
কবি ও কথাসাহিত্যিক আবু সাইদ কামাল। (জন্ম ৫ জানুয়ারি ১৯৫৯ সালে ময়মনসিংহ জেলায়) লিখছেন প্রায় তিন যুগ ধরে। সত্তর দশকে কবিতা দিয়ে শুরু করলেও লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ নব্বইয়ের দশকে ।। নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, শিশুতােষ গল্প ও ছড়া। এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৮টি। সম্পাদনা করছেন ‘পাদদেশ’ছােটদের সাহিত্য ও ‘ছড়াপাতা' নামে তিনটি ছােট কাগজ। এ কথা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, একজন নিষ্ঠাবান এবং নিরলস সাহিত্যকর্মী ও সাহিত্য সেবী হিসেবে ইতােমধ্যে তিনি নিজস্ব স্থান করে নিয়েছেন। লেখকের বিশেষ পরিচিতি কথাসাহিত্যিক ও ছড়াকার হিসেবে। গত দুই যুগে উল্লেখযােগ্য সংখ্যক শিল্পোত্তীর্ণ ছোটগল্প লিখেছেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ছােট কাগজে। বিশেষ করে গারাে পাহাড়ের পাদদেশ এলাকার সংখ্যালঘু। নৃগােষ্ঠী নিয়ে তার ছােটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ সুধীমহলে প্রশংসিত হয়েছে। এ ছাড়াও ইতােমধ্যে মাতৃকুলভিত্তিক গারাে সমাজ’ ও হাজংদের অতীত বর্তমান নামে প্রকাশিত তাঁর গবেষণাধর্মী দুটি প্রবন্ধগ্রন্থ বেশ তথ্যসমৃদ্ধ। বাঁহাতি তানিয়া' নামের উপন্যাসটি ২০১৬ সালে দৈনিক যায় যায় দিন ঈদসংখ্যায় প্রকাশিত হয়।