‘যে কোন মূল্যে’ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করিতে হইবে। এই শপথবাক্য নিত্য যাঁহারা উচ্চারণ করিয়া থাকেন তাহারা নিজেদের বলিয়া থাকেন ‘স্বাধীনতার অতন্দ্র প্রহরী’। সবার উপরে স্বাধীনতা সত্য, তাহার উপরে নাই। স্বাধীনতার নিকট শুদ্ধ প্রাণ নহে, খোদ ন্যায়বিচারও তুচ্ছ। এমনকি পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটাইতে হইলেও স্বাধীনতা রক্ষা করা ন্যায্য। যাঁহারা এই দাবি তোলেন তাঁহাদের্ অপর নাম প্রকৃত প্রস্তাবে ‘স্বাধীনতা-ব্যবসায়ী’ বা লিবারেল।
এই বইয়ের ১৮টি প্রবন্ধে সলিমুল্লাহ খান নানান দিক হইতে প্রশ্ন তুলিয়াছেন লিবারেলিজম বা স্বাধীনতা-ব্যবসায় মতবাদটি কেন এই স্ববিরোধে পরিপূর্ণ। তাঁহার বিচারে আদমবোমা শুদ্ধ পদার্থ নহে, পদও বটে। পদ ও পদার্থ যেখানে একাকার হয় তাহাকে বলে সম্বল বা সিম্বল। আত্মহত্যা করিয়া কেহ স্বাধীন হয় না এ কথা সত্য কিন্তু আত্মহত্যার সম্ভাবনা হিসাবে না লইলে স্বাধীনতার কোনো ভিত্তিই থাকে না। মহাত্মা গান্ধি হইতে স্যার বিদিয়াধর সুরজপ্রসাদ নাইপল, পণ্ডিত এডোয়ার্ড সায়িদ হইতে কবি শামসুর রাহমান পর্যন্ত স্বাধীনতা-ব্যবসায়ের নানান রূপ এই বইতে দেখানো হইয়াছে।
সলিমুল্লাহ খান ‘ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ’ নামক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁহার কীর্তির মধ্যে গণ্য: আমি তুমি সে, আহমদ ছফা সঞ্জীবনী, সত্য সাদ্দাম হোসেন ও ‘স্রাজেরদৌলা’, আদমবোমা, স্বাধীনতা ব্যবসায় এবং Silence: On crimes of power। সম্পাদিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার মধ্যে: ফ্রয়েড পড়ার ভূমিকা, বেহাত বিপ্লব ১৯৭১, আহমদ ছফার স্বদেশ, গরিবের রবীন্দ্রনাথ, প্রাক্সিস জর্নাল, রাষ্ট্রসভা পত্রমালা, অর্থ: আহমদ ছফা রাষ্ট্রসভা পত্রমালা, আহমদ ছফা বিদ্যালয়, Apostrophe: Working Papers of the Center for Advanced Theory এবং Occasional Papers in Theory। অনূদিত গ্রন্থের মধ্যে: সক্রাতেসের তিন বাগড়া এবং আল্লাহর বাদশাহি: ডরোথি জুল্লের নির্বাচিত কবিতা।