গ্রন্থ পরিচিতি মার্কসের আগে বস্তুবাদ, ইতিহাসবাদ এবং দ্বন্দ্ববাদী সাহিত্য ছিল। যার অংশ বিশেষ হেগেল, মর্গান, জেমস ফ্রেজার, ডারউইন প্রমুখের লেখায় মেলে। সাহিত্য সতত প্রগতিশীল। তার এই বৈশিষ্ট্য তাকে মানবেতিহাসে সম্পর্ক স্থাপনের মর্যাদা দান করেছে, সে সম্পর্ক যত উন্নত সে সাহিত্য তত উন্নত। ১৮৪৮ সালে কমিউনিস্ট পার্টির ইসতেহার প্রকাশের পর আজ অবধি বিশ্বের দেশে দেশে কেন্দ্রীয় সাহিত্যভাবনা হিসেবে মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্বের অবস্থান প্রায় অবিসম্বাদিত। সৃজনশীলতা, সংগ্রাম আর মানবতা তথা শ্রেণীযুদ্ধ এই সাহিত্যের আখ্যান গড়ে তুলেছে। এই চিন্তা অনুধাবন সহজ নয়। তাই অনূদিত হবার ফলে অধিকতর পাঠক লাভের সুযোগ তৈরি হয়েছে। গ্রন্থটিতে যেসব রচনা রয়েছে: কাল মার্কস: ফার্ডিনান্ড লাসালের নিকট পত্র। ফ্রেডারিক এঙ্গেলস : ফার্ডিনান্ড লাসালের নিকট পত্র; মিন্না কাউটস্কির নিকট পত্র; মার্গারেট হারকনেসের কাছে পত্র। প্লেখানভ: ‘শিল্পের-জন্যে-শিল্প’ প্রসঙ্গে। ভ. ই. লেনিন: রুশ বিপ্লবের দর্পণ হিসেবে লিওঁ টলস্টয়; ল. ন. টলস্টয়। লিওঁ ট্রটস্কি: কবিতার আঙ্গিকবাদী গোষ্ঠী ও মার্কসবাদ। লুনাচারস্কি: মার্কসবাদী সাহিত্য সমালোচনা : কতিপয় প্রস্তাব। লু সুন: আমাদের নতুন সাহিত্য সম্পর্কে কিছু চিন্তা। ক্রিস্টোফার কডওয়েল: আধুনিক কবিতার বিকাশ। মাও সে-তুং: সাহিত্য-শিল্পকলা সম্পর্কে ইয়েনেনের আলোচনা-সভায় প্রদত্ত ভাষণ। গেওর্গ লুকাচ: অবতরণিকা। জর্জ টমসন: কবিতার শিল্পরূপ। আরনস্ট ফিশার: শিল্পকলার ভূমিকা। অঁরি আরভোঁ: দ্বান্দ্বিকতা। ওয়ালটার বেনজামিন: যান্ত্রিক পুনরুৎপাদনের যুগে শিল্পকলা। জেনে এইচ বেল-ভিল্লাডা: শিল্পের-জন্য-শিল্প মতবাদ : বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্ভব, সামাজিক অবস্থা ও কাব্যিক মতাদর্শ। ভবানী সেন: একজন মনস্বী ও একটি শতাব্দী। সিডনী ফিনকেলস্টাইন: মানবিকীরণে শিল্পকলা। পরিশিষ্ট: ক. নিখিল ভারত প্রগতি লেখক সংঘের ঘোষণাপত্র; খ. প্রগতি লেখক ও শিল্পীসংঘের সম্মেলনে গৃহীত ঘোষণাপত্র।
লেখক পরিচিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. সাঈদ-উর রহমানের জন্ম কুমিল্লা জেলার শিমপুর গ্রামে, ১৯৪৮ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারিতে। কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক (১৯৬৪), সিলেটের এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, বিএ (অনার্স) ও এমএ যথাক্রমে ১৯৬৯ ও ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৭১ সাল কেটেছে যুদ্ধক্ষেত্রে, মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষক হিসেবে। ১৯৭২ সালে গবেষক হিসেবে বিভাগে যোগদান, ১৯৭৫ সালে প্রভাষক পদে নিযুক্তি, প্রফেসর হন ১৯৯১ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ১৯৯২ সালে। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও ফরাসি ভাষায় ডিপ্লোমা পেয়েছেন যথাক্রমে ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে; গবেষণাকর্মের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন পুরস্কার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবদুর রব চৌধুরী স্বর্ণপদক অর্জন। বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৩ সালে। তিনি বহু গ্রন্থ প্রণেতা। যেমন - ১৯৭২-১৯৭৫ কয়েকটি দলিল; ওদুদ চর্চা; মার্কস ও মার্কসবাদীদের সাহিত্যচিন্তা ; অনিশ্চিত গন্তব্যে বাংলাদেশ; মাওলানা ভাসানীর ভাষণ ও বিবৃতি; পূর্ব বাংলার রাজনীতি-সংস্কৃতি ও কবিতা ইত্যাদি।