সমস্ত প্রশংসা মহান সৃষ্টি কর্তার, যিনি সৃষ্টি করেছেন আঠার হাজার মাকলুকাত, মানুষ এ মাকলুকাতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব। সমাজবন্ধ এ জীবের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ আচার-আচরণ কাঙ্খিত গণ্ডির মধ্যে রেখে কিভাবে একটি আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা উপহার দেওয়া যায়, সে লক্ষ্য সামনে রেখেই সমাজবিজ্ঞানের সূত্রপাত। বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞানের পঠন-পাঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করে (সর্বপ্রথম) ডা. নাজমুল করিম। তিনি ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে "সমাজবিজ্ঞান" বিভাগ নামক আলাদা বিভাগের সূত্রপাত ঘটান। এ কারণে, তাকে বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের পুরধার বা জনক বলে অভিহিত করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, তারপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং আস্তে আস্তে সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এর জ্ঞান চর্চা শুরু হয়। মানুষ নামীয় এ প্রাণীর বোধ ও বোধিক উৎকর্ষের সহায়তা প্রদানকারী প্রপঞ্চ হলো শিক্ষা। আর শিক্ষার্থী মাত্রই পরীক্ষার্থীর জ্ঞান কে পরিমাপ করার জন্য পরীক্ষার আসনে বসতে হয়। ফলে, প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রয়োজন হয় শিক্ষা সহায়ক নানান তথ্যাবলি। বস্তুত: এ বোধ থেকেই আমাদের এ বইটি রচিত হয়েছে। বর্তমান সরকার শিক্ষানুরাগী হয়ে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ হতে নতুন শিক্ষাক্রম প্রবর্তন করেছে যা ২০২২ সাল থেকে আর ও পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হবে। এ লক্ষ্য অর্জন এবং উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের জন্য ভবিষ্যতের ছাত্র-ছাত্রীদের কালের / যুগ চাহিদা পূরন করতে সক্ষম হবে আমাদের লিখিত এ বইটি। বর্তমানে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের উপর বিভিন্ন ধরনের নামি-দামী ও চোখ ঝলকানো বই ও গাইড বই বাজারে বের হয়েছে, যা ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃত বোধী ক্ষুধাকে মিটাতে সক্ষম নয়। এ জন্য ছাত্র/ছাত্রীর অবস্থার কথা বিবেচনা করে, পূর্ব থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রদ্ধা ভাজন শিক্ষক মন্ডলীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও আমাদের একান্ত প্রচেষ্টায় রচিত পুস্তকখানি ছাত্র-ছাত্রীদের মনের ক্ষুধা নিবারনে ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এই বইটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো-প্রতিটি পরীক্ষার্থী তাদের পরীক্ষা নামক বৈতরনী পার হওয়ার জন্য, এতে এমন কিছু টেকনিক ও রসদের যোগান দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী খুব সহজেই সৃজনশীল প্রশ্ন ও এ্যাসাইমেন্টসহ সব ধরনের প্রশ্নের উত্তর সহজেই দিতে পারবে বা খুজে পাবে। শুধু তাই নয়, বইটির কিছু অংশ অধ্যায় করে ছাত্র-ছাত্রীরা একই কৌশল অবলম্বন করে নিজের ভাষায় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে সক্ষম হবে। প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী বৃন্দ, বিগত দিন থেকেই সমাজবিজ্ঞানের মূল বাংলা বইয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। সেই অভাবের শতভাগ সহযোগিতা পুরনের বিশ্বাস ও আশ্বাস দিয়ে আমরা আমাদের বইটি রচনা করেছি। গ্রন্থটি রচনার ক্ষেত্রে, যে সকল দেশ, বিদেশী পত্র-পত্রিকা ও গ্রন্থাবলীর সহায়তা গ্রহন করেছি, সে সকল লেখক ও কলামিষ্টদের প্রতি জানাই আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন, ধন্যবাদ ও ভালবাসা। সুধী, মহাগ্রন্থ আল-কোরআন ছাড়া মনুষ্য লিখিত এমন কোন গ্রন্থ নেই, যা ভুল বা সমালোচনার উর্ধ্বে। আমাদের লিখিত এ পুস্তকটিও সেই আলোকেই বিচার্য। তথাপিও এই বইটি সম্পর্কে ভালো কোন পরামর্শ পেলে তা আমরা সাদরে গ্রহন করবো। পড়া-লেখার সঠিক মান উন্নয়নে জ্ঞান পিপাসু ছাত্র-ছাত্রী উপকৃত হলেই আমাদের পরিশ্রম স্বার্থক।