আমাকে অনেকেই অনুরোধ করেছেন আমি যেন ছন্দের ওপর একটি গ্রন্থ রচনা করি। আমিও অনেকবার ভেবেছি বাংলা কবিতার ৩টি ছন্দ নিয়ে খুব সহজ-সরল ভাষায় একটি বই লিখব। যাতে তরুণ এবং কোনো কোনো প্রবীন কবিও খুব সহজে ছন্দটা শিখে নিতে পারেন। ছন্দ শেখানোর কাজটি এখন আমি পেশাগতভাবেও করি। ক্লাস-উপকরণ হিসেবে কিছু লিখতেও হয়েছে, সেগুলোকে আরেকটু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে কিছু দৃষ্টান্ত যোগ করলে হয়ত একটি বই হয়ে যায়। কিন্তু এই কাজটিতে আমি তেমন উৎসাহ পাই না। কেন পাই না তা নিয়ে কখনও ভাবিনি। আমাকে যখন কোনো সম্পাদক ফোন করে বলেন, অমুক বিষয়ের ওপর একটি প্রবন্ধ দিন, কখনো দেই কখনো দেই না। দিলেও খুব আগ্রহ নিয়ে তা লিখি না। কিন্তু যদি বলেন, অমুক বিষয়ের ওপর একটি গল্প বা কবিতা দিন, আমি খুব উৎসাহ বোধ করি। এই উৎসাহ এবং নিরুৎসাহের কারণ নিয়ে কখনো ভাবিনি। কিন্তু ঘটনাটি যখন বারবার ঘটে তখন কোনো কোনো ঘটনার প্রেক্ষিতে নিজের মধ্যেই প্রশ্নটি উঁকি-ঝুঁকি মারে। একদিন এ-নিয়ে ভাবলাম এবং বুঝলাম, সৃজনশীল কাজের প্রতি আমার সুস্পষ্ট একটি পক্ষপাত আছে, এবং আমি এ-ও জানি আমার মননশীল কাজও একেবারে মন্দ হয় না। কিন্তু ভেতর থেকে আমি যে উত্তর পাই, তা হচ্ছে, ঈশ্বর আমাকে সৃজনশীল কাজ করার এসাইনমেন্ট দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
কাজী জহিরুল ইসলাম। লিখেন গল্প, কবিতা, ভ্রমণকাহিনি ও প্রবন্ধ। পেশাগত প্রয়ােজনে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভ্রমণ করেছেন পৃথিবীর বহু দেশ। দীর্ঘ দিন খণ্ডকালীন সাংবাদিকতা করেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহ : উড়ালগদ্য (কলাম), বিহঙ্গপ্রবণ (আত্মজৈবনিক উপন্যাস), জানা-অজানা আফ্রিকা (ভ্রমণ), গজমােতির দেশ আইভরিকোস্ট (ভ্রমণ) After a Long way (কাব্যগ্রন্থ), ছয় ঠ্যাংঅলা নীল সাপ (গল্প) ইত্যাদি। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি জসীমউদ্দীন পুরস্কার ১৪০৬ এবং ভ্রমণ সাহিত্যে ড. দীনেশ চন্দ্র সেন পদক ২০০৮-এ ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে জাতিসংঘের একজন আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা হিসেবে আমেরিকায় কর্মরত। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। স্ত্রী মুক্তি, পুত্র অগ্নি এবং কন্যা জলকে নিয়ে লেখক বসবাস করছেন কাব্যময় সংসারে।