প্রশ্নোত্তরে মনোরোগ বইটিতে তিনটি অধ্যায় আছে। প্রথম অধ্যায়ে প্রথম থেকে দশম পরিচ্ছেদে স্কিজোফ্রেনিয়া, ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, উদ্বেগমূলক ব্যাধি, অবসেসিভ-কমপালসিভ ডিসঅর্ডার, কনভার্সন ডিসঅর্ডার, পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার, এ্যাটেনশন- ডেফিসিট/হাইপারএ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার, কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডার, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার ইত্যাদি মানসিক রোগ সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তরের মাধ্যমে আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের অভিভাবকরা তাদের কিশোর সন্তানদের নিয়ে প্রায়শই দুশ্চিন্তায় থাকেন। এ বয়সের নানারকম সমস্যা সম্পর্কে জানতে চান। অনেক সময় তারা তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। একাদশ পরিচ্ছেদে বয়ঃসন্ধিকালের নানাবিধ মনোসামাজিক সমস্যা নিয়ে সংক্ষেপে বলা হয়েছে। দ্বাদশ পরিচ্ছেদে যুগল সম্পর্ক নিয়ে লেখা হয়েছে। এ পরিচ্ছেদটি পড়লে সাইকোলজি ও সাইকিয়াট্রির শিক্ষানবীস ছাত্ররা উপকৃত হবেন বলে আশা রাখি। সেইসাথে দম্পতিরাও সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখতে কিছু সহায়তা পাবেন। ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদে মাইন্ডফুলনেস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এটা প্রাচীন বৌদ্ধদের ধ্যান থেকে নেয়া হয়েছে। এটি একটি মনস্তাত্তি¡ক প্রক্রিয়া যা প্রতি মুহূর্ত আপনাকে বর্তমান সম্পর্কে সচেতন থাকতে সাহায্য করে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে যে রোগগুলো সম্পর্কে প্রথম অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে সে সম্পর্কিত কিছু কেইস হিস্ট্রি সংক্ষিপ্ত আকারে বিবৃত করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে করোনাকালে শিশু, কিশোর, তরুণ, নারী, পুরুষের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন মানসিক সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। সেইসাথে ফ্রন্টলাইনারদের যেমন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, সাইকোলজিস্ট ও ডাক্তারদের করোনাকালের নানাবিধ অভিজ্ঞতা ও সীমাবদ্ধতার কথা লেখা হয়েছে। বইটি সাধারণ জনমানুষের কথা মাথায় রেখে সহজ ভাষায় লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি বইটিতে সন্নিবিশিত তথ্যগুলো দ্বারা তাঁরা উপকৃত হবেন। - অধ্যাপক ড. ঝুনু শামসুন নাহার ডা. ঝুনু শামসুন নাহার একজন প্রখ্যাত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। সেইসাথে একজন গবেষক ও মনোরোগবিদ্যার জনপ্রিয় শিক্ষক। তিনি নিয়মিতভাবে মানসিক রোগের ওপরে সচেতনতামূলক লেখালেখি করেন এবং টক শো ও ওয়েবিনারে মনোরোগের ওপরে গঠনমূলক আলোচনা ও মনোবিশ্লেষণ করেন। ডা. নাহারের প্রথম বই সাইকিয়াট্রিস্টের খেরো খাতা থেকে বাঙ্গালা গবেষণা থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে প্রকাশিত হয়। বইটি বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে।
ঝুনু শামসুন নাহারডা. ঝুনু শামসুন নাহার ১৯৫৬ সালের ২৮শে অক্টোবর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আদি বাড়ি যশোর জেলার বাহাদুরপুর গ্রামে। ডা. নাহার বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোরোগবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সেমিনারে তিনি গবেষণাপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। দেশী-বিদেশী জার্নালে তাঁর ৬৩টি গবেষণা পেপার প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্রজীবনে তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। এসএসসি পরীক্ষায় সম্মলিত মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। সোফিয়া মেডিকেল একাডেমি থেকে ডিসটিংকশন সহ ডাক্তারী পাশ করেছেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ এন্ড সার্জনস্ থেকে সাইকিয়াট্রি বিষয়ে ফেলোশিপ অর্জন করেন। চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি তিনি সচেতনতামূলক লেখালেখি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও ওয়েবিনারে সাধারণ জনগণের জন্য মানসিক রোগ বিষয়ে নিয়মিত আলোচনা করেন। উল্লেখ্য ডা. নাহারের পিতা বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। পিতার চাকরির সুবাদে তিনি বাংলাদেশের অনেক জেলায় ঘুরে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। বাহাদুরপুরে তাদের আদি নিবাস ‘বিশ্বাস বাড়ী’ ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ঘাঁটি হিসেবে সুপরিচিত ছিল।