গাের্কির মা উপন্যাস বিশ্ব সাহিত্যের এক শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। বিশ শতকের প্রথম দশকে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সারা পৃথিবীর ১২৭টি ভাষায় দ্রুত অনূদিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে, তােলপাড় হয় পাঠক মহলে। উপন্যাসের সারা শরীরে মার্কস-এঙ্গেলসের কমিউনিস্ট ইস্তাহারের বর্ণময়চ্ছটা। একটা উদ্দেশ্যমূলক, সমাজ বিপ্লবের প্রতি অনুরক্ত, কিছুটা প্রচারমূলকও বটে, এমন একটি কথা কাহিনি যে শিল্পগুণেও উতরে যায়, পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নয় যা এক শতাব্দী পরেও সমান সত্য, বােধকরি অদ্বিতীয় এক দৃষ্টান্ত। উপন্যাসে লেখকের অনুপুঙ্খ বীক্ষণে মহাকাব্যিক দৃষ্টির প্রসার এক আশ্চর্য মহিমময় কাণ্ড ঘটিয়েছে। রাশিয়ার শ্রমিক বস্তির এক পােড়খাওয়া মা-এর চোখ দিয়ে গােটা আখ্যানটি নির্মিত ও বিবৃত। শূন্য এক অন্ধকার থেকে আলােয় উদ্ভাসিত এক জীবন, যা উত্তরণের, সমাজতান্ত্রিক মানবতা ও বাস্তবতার এক অনন্য নজির। বিশ্বময়ী নারী শক্তির জয়ধ্বনি গাের্কির এই উপন্যাস। শতবর্ষে উপনীত এই উপন্যাসের মর্মবস্তু, শিল্পনির্মিতি আমরা ‘ গোর্কির জীবন গোর্কির আখ্যান ‘ গ্রন্থে উপলব্ধি ও বিশ্লেষণের প্রয়াস করেছি। আর গাের্কির বর্ণময়, তিক্ত জীবনটাকে না জানলে মা-উপন্যাসের অন্দরমহলে প্রবেশ করা যায় না। তাই ব্যক্তি জীবন ও সাহিত্য জীবনের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা অঙ্কনের চেষ্টা করা হয়েছে।