রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বা কাজী নজরুল ইসলাম-নাম হিসেবে এমন আহামরি কিছু নয়; বেশ সাদামাটা নাম, গতানুগতিকই বলা চলে। একালে কোনও সাহিত্যিক এমন নাম ধারণ করে আত্মপ্রকাশ করতে চাইতেন না বলেই মনে হয়। কিন্তু তিরিশোত্তর যুগের আধুনিকতা কবি-সাহিত্যিকের নাম পর্যন্ত পৌঁছেছিল। সৌন্দর্যচেতনার প্রমাণ একজন সাহিত্যিককে দিতে হতো নিজের নামকে সুন্দর আধুনিক শব্দচয়নে সমৃদ্ধ করে। ফলে জীবনানন্দ দাশ, অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু বা গোলাম মোস্তফা, ফররুখ আহমদ, জসীম উদ্দীন, আহসান হাবীব প্রভৃতি নামগুলো আদৃত হলো বেশি। অনেকে তাঁদের সাহিত্যিক সাফল্যের সঙ্গে সুন্দর নামায়নের সাযুজ্য খুঁজে পেলেন। তাই নামের আগের দিকটাতে যাঁরা রোমান রীতিতে আদ্যাক্ষর লিখতেন কিংবা পেছনে লিখতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি তাঁরা সাহিত্যের মূলধারা থেকে সরে গেলেন। এভাবে ডি এল রায় বা এস ওয়াজেদ আলী-দের সংখ্যা হ্রাস পেতে লাগলো। বিএ বিএল, এমএ বিটি বা বিএ (ক্যাল), এম এ (ক্যান্টাব) ধারীরাও নিজেদেরকে বিরত রাখলেন উচ্চ শিক্ষার গৌরব দেখানোর প্রয়াস থেকে। বায়ান্ন'র ভাষার লড়াই অবশ্য এক নতুন রীতির আদ্যাক্ষর ব্যবহারের রীতি চালু করে দিলো। এ এন এম হয়ে গেলেন আ ন ম, এ এস এম হলেন আশম। বাষট্টি'র শিক্ষা আন্দোলনের সূত্রে ছাত্ররাজনীতির বিকাশ ও ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রভাবে নামের সঙ্গে ডাক-নাম যোগ করার রীতি চালু হলো
Sazzad Qadir- জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৪ই এপ্রিল, টাঙ্গাইলের মিরের বেতকা গ্রামের মাতুলালয়ে। তাঁর পিত্রালয় ওই একই জেলার দেলদুয়ারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও এমএ পাস করেছেন যথাক্রমে ১৯৬৯ ও ১৯৭০ সালে। শিক্ষাজীবন শেষে অধ্যাপনা করেছেন করটিয়া’র সা’দত কলেজে, পরে সহকারী সম্পাদক ছিলেন সাপ্তাহিক বিচিত্রা ও দৈনিক সংবাদ-এর। বার্তা সম্পাদক ছিলেন দৈনিক দিনকালের। ১৯৭৮-৮০ সালে ছিলেন গণচীনের রেডিও পিকিং-এর ভাষা-বিশেষজ্ঞ। ১৯৯৫-২০০৪ সালে ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক। বর্তমানে দৈনিক মানবজমিন-এর যুগ্ম সম্পাদক। সাযযাদ কাদির নেশায় কবি, পেশায় সাংবাদিক। কবিতা ছাড়াও লিখেছেন ছোটগল্প, নাটক। পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন ইতিহাস থেকে কল্পবিজ্ঞান পর্যন্ত অনেক বিচিত্র ও কৌতূহলোদ্দীপক বিষয়ে। বিদেশের জনপ্রিয় উপন্যাস থেকে রসমধুর লোককাহিনী পর্যন্ত অনেক স্মরণীয় সাহিত্যসম্ভার তিনি উপহার দিয়েছেন পাঠক-পাঠিকাদের। তাঁর উল্লেখযোগ্য শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : আজব তবে গুজব নয়, ইউএফও: গ্রহান্তরের আগন্তুক, উপকথন, উপকথন আবারও, উপকথন আরও, উপকথন ফের, গল্পগাছা, তেপান্তর, বরিবল নামা, মনপবন, সবার সেরা, সাগরপার এবং রঙবাহার।