মানুষ হিসেবে স্বভাবতই কিছু প্রশ্ন আমাদের মনে জাগে। প্রথমত, মানবদেহ কীভাবে সৃষ্টি করা হলো? এরপর যে প্রশ্নটি দাঁড়ায় তা হচ্ছে মানুষকে কে সৃষ্টি করল, কেনই-বা সৃষ্টি করা হলো? প্রথম প্রশ্নটির উত্তর ফিজিক্যাল বা বস্তুগত জ্ঞান দিয়েই দেওয়া সম্ভব। বর্তমান সময়ে বস্তুগত জ্ঞান চরম উৎকর্ষ সাধন করেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞান এই ক্ষেত্রে নিজেকে ভিন্ন এক মাত্রায় নিয়ে গেছে। কিন্তু এই বস্তুগত উন্নতির সাথে সাথে আমাদের মেটাফিজিক্যাল বা আধ্যাত্মিক অবনতিও ঘটেছে। আমরা শুধু বজ্রগত জ্ঞান অর্জনের কারণে মানুষ কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করতে পারছি ঠিক, কিন্তু মানুষকে কে সৃষ্টি করেছেন এবং কেন সৃষ্টি করা হয়েছে- সেই উত্তর আমাদের চিকিৎসাবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত দিতে পারছে না। ফলে জীবন চলার পথে আমাদের উদাহরণ উদ্দেশ্যহীন পথিকের মতো হয়ে যাচ্ছে। তাই ‘মানবদেহ : স্রষ্টার সুনিপুণ সৃষ্টি’ এই বইয়ের মাধ্যমে আমরা ফিজিক্স এবং মেটাফিজিক্স দুটোকেই একই সাথে পড়ার চেষ্টা করব । আমরা স্রষ্টার এই সুনিপুণ সৃষ্টি মানবদেহকে চেনার মধ্য দিয়ে স্রষ্টাকে চেনার আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করব। এই বইয়ে মানবদেহের একটি অঙ্গ আরেকটি অঙ্গের সাথে কীভাবে সমন্বয় করে, কীভাবে মানবদেহকে সচল রাখে, সুশৃঙ্খলভাবে দেহকে পরিচালনা করে, তা সহজে সাবলীল ভঙ্গিতে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করা যায়— পাঠক এই বই পাঠ শেষে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন, আমাদের মানবদেহ কোনো কারণ ছাড়া অহেতুক সৃষ্টি হয়ে হয়নি। এত সুনিপুণ সৃষ্টি যেই স্রষ্টা করেছেন, তিনি উদ্দেশ্যহীনভাবে তা সৃষ্টি করেননি।