এই বইটি পড়লে কী হবে? মানুষের জীবন এক উদ্ভুত জগত। যেখানে উত্থান ও পতনের বাইরে আর কিছু নেই। কেউ হয়তো পতনের শেষ সীমায় গিয়ে বিস্ময়করভাবে ঘুরে দাঁড়ায়, কেউ আবার জীবনের কঠিন সত্যের কাছে হার মেনে সফলতার চূড়ান্ত থেকে পড়ে যায় ব্যর্থতার অতল অন্ধকারে। কিন্তু এই বইটি আপনাকে এমন এক পথের দিশা দিতে পারে, যা অনুসরণ করলে ব্যর্থতার অন্ধকার থেকে আপনিও পেতে পারেন চিরমুক্তি। এই বই আপনাকে দিতে পারে আত্মবিশ্বাসের এমন আলোর রেখা, যা আপনাকে নিয়ে যাবে অনিঃশেষ আলোর জগতে। আপনি যদি আপনার জীবনের অনাবিষ্কৃত অঞ্চলকে নতুন করে দেখতে চান, আপনি যদি ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে সফলতার স্বর্ণালী চৌকাঠে পা রাখতে চান, তাহলে এই বইটি আপনার জন্য। চূড়ান্ত সফলতা আসলে ধন-সম্পদের আধিক্যের উপর নির্ভর করে না। তারপরও ধন-সম্পদ মানবিক জীবনের অতীব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সুতরাং এই বইটি যদি আপনি যত্ন সহকারে ও বুঝে শুনে পড়তে পারেন, এটি আপনার জীবনকে নিয়ে যাবে এক আশ্চর্য সিঁড়িতে, যে সিঁড়ি বেয়ে আপনি সফলতার সিংহদুয়ারে পৌঁছে যেতে পারবেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিন এই বইটিকে বিংশ শতাব্দীর সেরা বইগুলোর একটি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শুধুমাত্র এই স্বীকৃতিই প্রমাণ করে রিচার্ড কোভি কতোটা গুরুত্বপূর্ণ এই সৃষ্টি মানুষের জন্য রেখে গেছেন। সাতটি অসাধারণ অভ্যাস শেখার চেষ্টায় আপনার প্রচেষ্টা সফল হোক!
স্টিফেন আর. কোভি এর পূর্ণ নাম স্টিফেন রিচার্ডস কোভি। তিনি জন্ম নিয়েছিলেন ১৯৩২ সালের ২৪শে অক্টোবর। জন্মগতভাবে তিনি একজন আমেরিকান। তিনি একাধারে একজন শিক্ষক, লেখক, বক্তা ও ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর বক্তব্যগুলো মূলত অনুপ্রেরণাদায়ী, যাকে আমরা বর্তমানে ‘মোটিভেশনাল স্পিচ’ নামেই বেশি চিনি। স্টিফেন আর কোভি এর বই সমূহ হচ্ছে ফার্স্ট থিংস ফার্স্ট, দ্য লিডার ইন মি, দ্য এইটথ হ্যাবিট, প্রিন্সিপ্যাল-সেন্টার্ড লিডারশিপ, দ্য থার্ড অল্টারনেটিভ ইত্যাদি। তাঁর প্রথম বই ছিল স্পিরিচুয়াল রুটস অফ হিউম্যান রিলেশনস (১৯৭০)। এটি ডেসেরেট বুক কোম্পানি থেকে প্রকাশ পায়। তাঁর পরবর্তী লেখাগুলোর পূর্বাভাস হিসেবে এই বইটিকে ধরা যায়। স্টিফেন আর. কোভি এর অনুবাদ বইগুলোর মাধ্যমে তাঁর অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্য বিশ্বজোড়া মানুষের মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলা ভাষাতেও তাঁর বই অনূদিত হয়েছে। তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় বই হলো ‘দ্য সেভেন হ্যাবিটস অফ হাইলি ইফেক্টিভ পিপল’। স্টিফেন আর. কোভি এর বই সমগ্র বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত, কারণ তিনি তাঁর লেখার মধ্য দিয়ে মানুষকে অনুপ্রেরণার ছোঁয়া দিতে পেরেছেন। ১৯৯৬ সালের টাইমস ম্যাগাজিন বিশ্বের ২৫ জন সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে তাঁকে রাখে। ২০০৮ সালে তিনি স্টিফেন কোভি অনলাইন সম্প্রদায় গড়ে তোলেন। ২০১২ সালের ১৬ জুলাই কোভি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময়ে তিনি উটাহ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে জন এম. হান্টসম্যান স্কুল অফ বিজনেসের অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর পড়াশোনাও ব্যবসায় অনুষদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তবে একটা সময় আমেরিকান সেলফ হেল্প বইগুলো পড়ে তাঁর মাথায় চিন্তা আসে যে, এভাবে তিনি অনেককেই হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারবেন। তিনি পিটার ড্রাকার ও কার্ল রজার্সের দ্বারা মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনেকটা প্রভাবিত ছিলেন।