কল্পনা প্রবণতা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। আজ যা কল্পনা কাল তা বাস্তব বা বিজ্ঞানÑ এমন ভাবাটা অবাস্তব নয়। বিজ্ঞানমনস্ক কল্পনাশক্তির উপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বা সায়েন্সফিকশন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাটলে এর বহুবিধ প্রমাণ পাওয়া যায়। গ্রিক পৌরাণিক উপাখ্যানের ইকারুসের আকাশে ওড়ার কল্পিত কাহিনীর আজ বাস্তব রূপ দিয়েছে বিজ্ঞান। খ্রিস্টীয় ১০০ সালের দিকে গ্রিক চিন্তাবিদ ও লেখক লুসিয়ান সামোসাটা গ্রন্থাকারে (সম্ভবত) পৃথিবীর প্রথম সায়েন্সফিকশন লেখেন; যার নামÑ‘‘আইকারো নিপ্পাস’’ বা ‘‘সত্য ইতিহাস’’। এই গ্রন্থে সর্বপ্রথম চন্দ্রাভিযান সম্পর্কে কল্পিত আখ্যান জানা যায়। এর অনেক পরে বিশ^খ্যাত সায়েন্সফিকশনার জুলভার্ন (১৮০০-১৯০৫) চাঁদকে নিয়ে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখলেন ‘‘ফ্রম দ্য আর্থ টু দ্য মুন’’। তখন মহাশূন্যে নভোযান চলা তো দূরের কথা জলপথে জাহাজ আর স্থল পথে সবেমাত্র মোটরগাড়ি চলা শুরু করেছে। তাঁর ভাবনার ১০৪ বছর পরে (১৯৬৯খ্রি.) মানুষ চাঁদে গিয়েছে। জুলভার্নের এই কল্পনাকেই বাস্তব রূপ দিয়েছে বিজ্ঞান।
শিশু-কিশোরদের কাছে রূপকথা, ভূতের গল্প পড়তে যেমন ভালো লাগে তার চেয়ে বেশি ভালো লাগে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বা সায়েন্সফিকশন পড়তে। এর কারণ বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। একজন শিশু বর্তমানে শৈশবকাল থেকেই বিজ্ঞান পরিমলে গড়ে ওঠে; তার মন ও মানস তৈরি হয় বিজ্ঞানকে কেন্দ্র করে। সেই সাথে শুধু শিশু নয় প্রতিটি মানুষই কল্পনা-প্রবণ; তারা কল্পনায় পাখা মেলতে চায় একেবারে বন্ধনহীন ভাবে। আর এর বিজ্ঞানসম্মত খোরাক মেটায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বা সায়েন্সফিকশন। এ কারণেই শিশু-কিশোরদের কাছে বর্তমানে সায়েন্সফিকশন একটি জনপ্রিয় বিষয়।
ভূত নয় ভূতিয়েন বইতে ১০টি ভিন্নধর্মী সায়েন্সফিকশন রয়েছে। এ বইয়ের গল্পগুলো পাঠককে অজানা-অচেনা এক ভিন্নতর জগতে নিয়ে যাবে যেখান থেকে বেরিয়ে আসতে কিছুতেই মন চাইবে না। বইটি কিশোরদের জন্য লিখিত হলেও ছোট বড় সব পাঠকই পড়ে মজা পাবেন আশা করি।