আবার চলে এল মন খারাপ করা বছরের প্রথম দিনটা। অদ্ভুত এইদিনে মানুষ খুশি থাকতে চায়। যত কিছু ভালো আছে সব কিছুকে আঁকশি দিয়ে টেনে নীচে নামায় অথবা বুকের মধ্যে যে সুখ-দুঃখ-আনন্দের খোপগুলো থাকে তাকে টেনে বার করে, বেছে বেছে। আমাকে বাছতে হয় না। আজকের দিনের মনখারাপগুলো আপসে চলে আসে খোপের বাইরে। আর অজান্তে সেই অদ্ভুত মনখারাপগুলো স্মৃতি বেয়ে একটা সুখের স্পর্শও এনে দেয়। আমার ঘরটা তিনতলায়। ঘরটা কিন্তু বড়ো সুন্দর। দক্ষিণ খোলা, জানলা খুললে বাতাস, রোদ, এমনকী বৃষ্টির ছাট আমাকে ভিজিয়ে দেয়। যখন বাতাস পেতে ইচ্ছে করে তখন বাতাস। যখন মিঠে রোদ পেতে ইচ্ছে করে তখন রোদ-রেণু। আর চাদ্দিকে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো দেখতে ইচ্ছে করলে তাও পাই। সবচেয়ে ভালো লাগে জানলার ফাঁক দিয়ে হাতদুটো বার করে বৃষ্টিকে ছুঁতে। আর মল্লিকার ধমক, আরে দেখছ কী? বিছানাটা ভিজে গেল। হয়তো বললাম, ‘না ভেজেনি। শুধু হাতদুটো ভিজছে।' ‘ভিজতে কতক্ষণ ? তুমি জানলা বন্ধ করো।” ঘরটা মল্লিকাই সাজিয়ে দিয়েছে। দেয়াল জুড়ে কাচের শো-কেস। যত রাজ্যের মেমেন্টো, স্মারকপত্র, বইপত্তর। আর একটা শো-কেসে রয়েছে, কিছু স্মৃতি। যেমন পূবিতার ছোটোবেলার ব্যবহার করা খেলনাপাতি, প্লাস্টিকের পুতুল তখনকার সময়ে। একটা ডল আছে ওর, চেয়ে থাকে সবসময়। কিছু পুরোনো ল্যামিনেট করা ছবি।