এই বইটি রহস্যসন্ধানী দময়ন্তীর পাঁচটি ঘটে যাওয়া অপরাধের সমাধান করবার কাহিনি। বাঙালি তো চিরকালই ডিটেকটিভ গল্পের ভক্ত। কোনো এক গুণী বলেছিলেন যে ডিটেকটিভ গল্প সকলকেই আনন্দ দেয় কেবল খুন হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটিকে ছাড়া। কাজেই যুগে যুগে সব সাহিত্যেই ডিটেকটিভ গল্প লেখা হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। তাহলে এর মধ্যে দময়ন্তীর জায়গা কোথায়? আছে। আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে বাঙালিরা বীরাঙ্গনাদের একটু সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখত। সেই কোনকালে কোন শাস্ত্রকার বলেছিলেন, 'গৃহিণী গৃহমুচ্যতে' –সেই কথাটাই বাঙালি ধরে বসেছিল। আর তাই, সংস্কৃততে যাঁরা খুব সড়োগড়ো ছিলেন না, তাঁরা আবার গৃহিণীকে দিয়ে প্রবলবেগে ঘর মোছাতেন। কিন্তু দিন পালটাচ্ছে। প্রথমদিকে দু-একজন মহিলা ডিটেকটিভ, যাঁদের দেখা যাচ্ছিল, তাঁরা ছিলেন যাত্রাদলের নারীচরিত্রের মতো শাড়িপরা পুরুষ তাঁরা এক ঘুসিতে কিংবা লেঙ্গি মেরে আপ-কান্ট্রির পাঠান গুন্ডাকে ধরাশায়ী করতেন বা একলাফে দশফুট উঁচু পাঁচিল ডিঙিয়ে যেতেন। কিন্তু কোনো শিক্ষিতা, যাকে বলে আলোকপ্রাপ্তা, মহিলা খুনখারাবি সেই ধরনের কোনো নোংরা ব্যাপারে নাক গলাবেন বা যুক্তি অথবা বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে এইসব ব্যাপারে পুলিশকে অপরাধীকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করবেন সেটা ঠিক সহজপাচ্য ছিল না। দময়ন্তীর জায়গা এইখানেই। সে সংস্কারের কাচের দেওয়াল ভাঙতে এসেছিল। তবে লেখা যখনই হয়ে থাক না কেন, দময়ন্তী বোধ হয় আজও প্রাসঙ্গিক। নইলে দ্বিতীয় খণ্ডটি প্রকাশিত হত না বা ওয়েবসিরিজে ‘হই চই’ এর নাট্যরূপ নিয়ে আসতেন না।