ভূমিকা বইটির খসড়া প্রথম বেরিয়েছিল ষাণ্মাসিক বহুরূপী-তে মে ১৯৯০ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৯২-এ। সেগুলি এক জায়গায় জড়ো করার সময়-সুযোগ আর হয় নি। এত বছর বাদে পুনশ্চ-র সন্দীপ নায়কের সৌজন্যে পরিমার্জিত হয়ে বইটি বেরচ্ছে। বের্টল্ট ব্রেশ্ট (১৮৯৯-১৯৫৬)-এর গালিলেও-র জীবন পৃথিবীর সেরা নাটকগুলির একটি। বাঙলা সমেত আরও বহু ভাষায় এটির অনুবাদ হয়েছে। নাটকটি ঘিরে কিছু কথা মনের মধ্যে গত বাহান্ন বছর ধরে পাক খেয়েছে। এটি পড়েছিও অন্তত বাহান্নবার (এখনও পড়ি)। ফলে অনেক ব্যাপার নজরে এসেছে যেগুলি দু-তিন বার পড়লে ধরা যেত না। নাটকটি পড়ার ও দেখার অভিজ্ঞতা মিলিয়ে বইটি লেখা। নাটক—শুধু নাটকই নয়, যে-কোনো শিল্পকর্ম রচনার উদ্দেশ্য আর লিখিত রূপ সর্বদা একমুখে চলে না। উল্টে অভিকৃতি (পারফরমেন্স্) অনেক সময়ে অভিপ্রায় (ইনটেনশন)-এর উল্টো মুখে যায়। মার্কসীয় সাহিত্য সমালোচনার ক্ষেত্রে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত মত । বালজাক প্রসঙ্গে এই কথাটি প্রথম বলেছিলেন ফ্রেডরিক এঙ্গেলস; এটিকে সূত্রবদ্ধ করেন হাঙ্গেরীয় দার্শনিক ও সাহিত্য সমালোচক গেওর্গ লুকাচ (১৮৮৫-১৯৭১)। তাঁর আগেও অবশ্য আরও কেউ কেউ ঘটনাটি লক্ষ্য করেছিলেন। গালিলেও-র জীবন সম্পর্কে আমার মনে হয়েছে : অভিপ্রায় আর অভিকৃতির মধ্যে গরমিলের এটি এক আদর্শ দৃষ্টান্ত। আর, শুধু এই গরমিল নয়, আরও একটি গরমিলের দিক নজর করার মতো। সেটি এই : লেখকের অভিকৃতি যদি তাঁর অভিপ্রায়কে নিখুঁতভাবে