"স্বপ্ন পাখির সুরগুলো তাই এক থাকে না/ একটা পাখি এক জীবনে এক থাকে না'... দৃশ্যের মাঝে অদৃশ্যের ফারাক মূর্ত হলে, ছায়াহীন রাতের সারি, আগুনের পোড়া পোড়া সুখ, পায়ে পায়ে কাছে আসে, ছলাৎছল শব্দ করে লুকোচুরি খেলে জল...।' মৃত্যুপাঠের সুখ নয়, মায়াবী কলম ঘিরে প্রেমবৃত্তে জল ও নারী নিত্যনতুন রূপে আবর্তিত হতে থাকে, কবির মনন ছুঁয়ে পাঠকও জেনে যান 'জল ও প্রিয়ার মধ্যে সাযুজ্য অনেক / সহজে ছোঁয়া যায় না, ছুঁতেও নেই।' শতরঞ্জি কোর্টের মতো প্রেমের পৃথিবী'র হারজিতের খেলায় বিরহ-মিলন, সুখ-দুঃখ, কোনো কিছুই কান্ত করে না। প্রেমিক কবিকে। তিনি জানেন 'ভালোবাসার ডাক নাম অপেক্ষা'... জানেন যে কোনো সময় চরাচর থেকে নেমে আসবে ‘নীল আদর.... আর তাই কবি কামরুল বাহার আরিফ, তাঁর দীপ্তিময় স্বতন্ত্র ভাষায় নির্দ্বিধায় উচ্চারণ করতে পারেন, একা মানে সঙ্গীহীন নয়। পৃথিবীর সমস্ত প্রেমিকের মতো কবিরও প্রেম ভাবনার কেন্দ্রে আছেন অদৃশ্য এক নারী.... শান্ত সমাহিত চেতনা নির্ভর এই কবির প্রেমে তাই শরীরী মাদকতা নেই, আছে সত্য ও সুন্দরের প্রতি সমর্পণ। তাঁর ব্যক্তিজীবন ও সামাজিক অস্তিত্ব ঘিরে বিপন্ন সময়ের অস্থির দোলাচলকেও তিনি এক পবিত্র প্রেমচেতনার মোড়কে রেখে দিয়েছেন। তাঁর মননে। আত্মমগ্ন কবির কলম আমাদেকে উপহার দেন। অনিবার্য এক পদ্ধতি “সব সুন্দর দেবীরূপে এলে ডাকাতও প্রেমিক হয়ে যায়।” নৈরাশ্য বা হতাশা নয়, বলিষ্ঠ প্রত্যয়ে অনায়াসে তিনি তাই ভালোবাসা ও ঘৃণা সবই তুলে দেন প্রেমিকার হাতে... কেননা তিনি জানেন। শেষ অবধি ভালোবাসাই চিরন্তন। পূর্ব প্রকাশিত পাঁচটি কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে নিজস্ব কাব্যভাষা অর্জনের নিরন্তর প্রয়াস তাঁকে ব্যতিক্রমী করেছে... জীবনের সমস্ত সুন্দরের প্রতি তাঁর সমর্পিত শব্দমালা... "তোমার প্রেমে ডুবসাঁতারে জীবন মরণ ধন্য... পাঠককেও কবির কবিতায় অবগাহন করার উৎসাহ দেবে, এমনই বিশ্বাস আমার। . মৃণাল বসুচৌধুরী কবি, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত