দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ‘মাকতাবাতুত তাকওয়া’ থেকে প্রকাশিত হলো, ‘বাংলা থেকে আরবি অনুবাদ শিখি’ শীর্ষক বইটি । বইটির প্রারম্ভে ‘অনুবাদ বিষয়ে কিছু নির্দেশনা’, ‘বাংলা থেকে আরবি অনুবাদ : কিছু নির্দেশনা’ ও ‘আরবিভাষা শেখার পদ্ধতি’ শীর্ষক তিনটি প্রবন্ধ রয়েছে। তারপর রয়েছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম-মৃত্যু তারিখ বিষয়ক উচ্চতর গবেষণামূলক একটি নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ ও তার আরবি অনুবাদ। সর্বশেষে রয়েছে নির্বাচিত শব্দার্থ। নবিজির জন্ম-মৃত্যু বিষয়ক প্রবন্ধটির লেখক হলেন প্রখ্যাত গবেষক মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দীন হাফিজাহুল্লাহ। পক্ষান্তরে আরবি অনুবাদক হলেন শাইখ মাওলানা সফিউল্লাহ ফুআদ আফাল্লাহু আনহু। আরবি অনুবাদকর্মটি আদৌ বাংলা থেকে আরবি অনুবাদ শেখার নমুনা দেখানোর জন্য তৈরি করা হয়নি। তা হয়েছিল মূলত আরব ও মুসলিম বিশ্বের বরেণ্য ইসলামি স্কলারদের সামনে নবিজির জন্ম-মৃত্যু তারিখ বিষয়ক বক্ষ্যমাণ গবেষণাটি তুলে ধরার লক্ষ্যে। তাই সাধ্যের মধ্যে চেষ্টা করা হয়েছে অনুবাদটি যেন মৌলিক রচনার মর্যাদা পায় এবং আরব লেখকদের কলমে আরব বিশ্বের মানসম্মত গবেষণাপত্রগুলোতে প্রকাশিত অভিসন্দর্ভের ভাষায় হয়। আলহামদুলিল্লাহ, অনুবাদটি ইতোমধ্যে চলমান উন্নত আরবিভাষার রুচি রাখে, দেশ-বিদেশের এমন অনেক সুযোগ্য ব্যক্তিবর্গের আন্তরিক প্রশংসামূলক মূল্যায়ন লাভ করেছে। ওদিকে বাংলা থেকে আরবিভাষায় অনুবাদ শেখা আরবিভাষার শিক্ষার্থীদের একটি প্রয়োজনীয় বিষয়। বাংলা থেকে আরবিভাষার মানসম্মত কোনো অনুবাদ মিলিয়ে অধ্যয়ন করা আরবি অনুবাদ শেখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। সেই অনুভূতি থেকে পরামর্শসাপেক্ষে এ বইটি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তখন শুরুতে উল্লিখিত প্রবন্ধগুলো এবং শেষাংশে প্রকাশিত শব্দার্থগুলো যুক্ত করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে বইটি আত্মপ্রকাশ লাভ করেছে। আমরা আশাবাদী, শুরুর প্রবন্ধ তিনটিতে আরবিভাষার শিক্ষার্থীগণ বাস্তব অভিজ্ঞতানির্ভর প্রচুর নির্দেশিকা পাবেন। আন্তরিক প্রচেষ্টা ও মুখলিসানা দুআ অব্যাহত থাকলে সেগুলো এবং শেষে উল্লিখিত শব্দার্থগুলো তাদের জন্য এ বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রসর হওয়ার সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ। বিশেষ দ্রষ্টব্য : যারা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম-মৃত্যু তারিখ সংশ্লিষ্ট আলোচ্য গবেষণা ও তার ফলাফল জানতে আগ্রহী, তাদের তো পুরো প্রবন্ধটিই পাঠ করতে হবে। কিন্তু যারা ব্যবহারিক আরবিভাষা ও সেই ভাষায় আরবি অনুবাদ শেষার জন্য বইটি সংগ্রহ করবে, তাদের জন্য পুরো মাকালাটি পাঠ করা এবং ধারাবাহিক পাঠ করা কোনোটিই জরুরি নয়। তারা ঘরে-বাইরে যখন যখন সুযোগ হয়, অনির্দিষ্টভাবে যেকোনো পৃষ্ঠা খুলে শুধু ওই পৃষ্ঠা বা ওই অনুচ্ছেদ পাঠ করেও যথেষ্ট উপকৃত হতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা বইটিকে আপন লক্ষ্যে উপকারী বানান ও কবুল করুন। আমিন! -আহসানুল্লাহ সাঈদ উজানভী (খতিব, মুহাদ্দিস)
বাংলাদেশে আরবিভাষার প্রাণপুরুষ তিনি। রচনা করেছেন অসাধারণ কিছু গ্রন্থ। জন্ম কুমিল্লার চান্দিনা থানাধীন বসন্তপুর গ্রামের পূর্ব ভূঁইয়াপাড়ায়। ১৯৭২ ঈসায়ির ১৮ মার্চ। পড়ালেখার হাতে খড়ি পিতা আবদুল কাদির ও মাতা রাবেয়া খাতুনের কাছে। দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন প্রথমে ১৪১৫-১৬ হিজরি শিক্ষাবর্ষে বারিধারা মাদরাসায়; ১৪১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে দেওবন্দে গ্রহণ করেছেন ‘আরবি সাহিত্যে’র উচ্চতর পাঠ। তিনি মাওলানা আবদুল মতিন বিন হোসাইনের নিকট বাইয়াতের ইজাযতপ্রাপ্ত হন ১৪৩৩ হিজরিতে। ‘মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা’, ‘জামালুল কুরআন মাদরাসা’ গেণ্ডারিয়া, ‘আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানীনগর ঢাকা’য় হাদিসের উস্তাদ এবং আরবিভাষা ও সাহিত্য বিভাগে’র তত্ত্বাবধায়ক উস্তাদের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি ‘মাহাদুশ শায়খ ফুআদ লিদ্দিরাসাতিল ইসলামিয়া ঢাকা’য় অবস্থান করছেন।