বাংলা সাহিত্যে উত্তরবাংলার জীবন ও জনপদ একটি বিশেষ ব্যঞ্জনায় উপস্থাপিত- মাসুদুল হক তাঁর গল্পে উত্তরবাংলার জীবন ও জনপদের মানুষের জীবনকথাকে নির্মাণ করেছেন ধ্রুপদী প্রকৌশলে। মাটিলগ্ন মানুষের জীবনবোধের এক স্বালোকচিত্র মাসুদুল হকের গল্প, আঞ্চলিক বোধকে অসামান্য শিল্পদক্ষতায় তিনি করে তুলেছেন বৈশ্বিক ও সার্বজনীন। ফলে তাঁর গল্পের চরিত্ররা রক্তমাংসের মানুষ হয়ে দীক্ষিত পাঠককে আন্দোলিত ও অনুপ্রাণিত করে এবং নিমজ্জিত করে এক আত্মবোধসত্তায়! শৈল্পিক হৃদয় আর্দ্র হয়ে ওঠে, নিমগ্ন পাঠক আত্ম-আবিষ্কার করে এইসব গল্পের নানাবিধ অনুষঙ্গে। বিশ শতকের নব্বই দশকের গল্পকার মাসুদুল হক তাঁর গল্পনির্মাণ শৈলীর কারুকাজে হয়ে ওঠেন কালোত্তীর্ণ এবং তাঁর গল্পপাঠে পাঠক আস্বাদন করতে পারে ধ্রুপদী জীবনের নতুন স্বাদ, এ গল্পসংগ্রহ তারই প্রমাণ রাখে। অয়নিকা আলপনা প্রভাষক, বাংলা বিভাগ, প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মাসুদুল হক(১৯৬৮) কবি, কথাসাহিত্য ও অনুবাদক। আন্তর্জাতিক ব্লগ ও ম্যাগাজিনে নিয়মিত ইংরেজি কবিতা লেখার পাশাপাশি অনুবাদ করে চলেছেন। বাংলা একাডেমির রিসার্স-ফেলো (১৯৯৭-২০০০) হিসেবে পিএইচ.ডি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অভিসন্দর্ভ : নন্দনতত্ত্ব: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশের কবিতা (১৯৪৭-১৯৯০)। পেশায় দর্শনের অধ্যাপক।বর্তমানে অধ্যক্ষ, বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ত্রিশ। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে তিনি ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী পত্রিকা THE POET কর্তৃক "International poet of week"- এ ভূষিত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক কবিতায় অবদানের জন্য পর্তুগাল থেকে স্বীকৃতি স্বরুপ অর্জন গোল্ডেন শিল্ড সম্মাননা (২০২১)। এছাড়াও বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কার (২০১১); চিহ্ন পুরস্কার (২০১৩),রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ; দিনাজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (২০১৪) অর্জন করেছেন।
তিনি ঢাকার জিন্দাবাহারে ৩রা জানুয়ারি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ জন্ম গ্রহন করেন। পিতা জহিরুল হক ও মাতা ফরিদা আক্তার। শিক্ষা স্নাতকোত্তর (দর্শন) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; পিএইচডি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অভিসন্দর্ভ : নন্দনতত্ত্ব: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশের কবিতা (১৯৪৭-১৯৯০)। পেশায় সহকারী অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, দিনাজপুর সরকারি কলেজ, দিনাজপুর। গবেষণা-বৃত্তি : রিসার্স-ফেলো (১৯৯৭-২০০০), বাংলা একাডেমি। প্রকাশিত গ্রন্থ: কবিতা: টেনে যাচ্ছি কালের গুণ (১৯৮৭); অলৌকিক স্পশর্ (১৯৯০); ধাঁধাশীল ছায়া (২০০০); ধ্বনিময় পালক (২০০০); The Shadow of Illusion (২০০৫); জন্মান্ধের স্বপ্ন (২০১০); Blind Man`s Dream (২০১০); ছোটগল্প: তামাকবাড়ি (১৯৯৯); ঢুলকিপুরাণ (২০১০); আবার কাৎলাহার (২০১১), নাবিকের জুতো (২০১৩); উপন্যাস: দিনমুলুক (২০১৫); প্রবন্ধ-গবেষণা: বাংলাদেশের কবিতার নন্দনতত্ত্ব(২০০৮); হাজার বছরের বাংলা কবিতা (২০০৮); দিনাজপুরের লোকসংস্কৃতি: ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার (২০০৮); মুক্তিযুদ্ধ:দিনাজপুর(২০০৮); জীবনানন্দ দাশ ও অন্যান্য(২০১১); রবীন্দ্রনাথ: ছেলেবেলা (২০১২); অনুবাদ: ধূসর বুধবার (অনূদিত কাব্যগ্রন্থ, মূল: টি. এস. এলিয়ট,১৯৯৯); বালি ও ফেনা (অনূদিত কাব্যগ্রন্থ, মূল: কাহ্লিল জিবরান,২০০৮), হল্লা (অনূদিত কাব্যগ্রন্থ, মূল: এ্যালেন গিন্সবার্গ, ২০১৭); সম্পদিত গ্রন্থ: কবিতা সিরিজ (কবিতা-সংকলন, ১৯৮৮); এই সময় এই স্রোত (কবিতা-সংকলন, ১৯৯১); মৃত্যূত্তীর্ণ:ইয়াসমিন (প্রবন্ধ-সংকলন); সাক্ষাৎকার গ্রন্থ: সেলিনা হোসেন (২০০০); লিটল-ম্যাগ (সম্পা) : শ্রাবণের আড্ডা(১৯৮৭-২০০০)। প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টতা: সাধারণ সদস্য: বাংলা একাডেমি;: কার্যনির্বাহী সদস্য: খাজা নাজিমুদ্দিন মুসলিম হল ও লাইব্রেরি, দিনাজপুর (২০০১-২০০৩); সভাপতি: আমাদের থিয়েটার, দিনাজপুর, বিবেকানন্দ হিউমেন সোসাইটি, দিনাজপুর (১৯৯৬-১৯৯৭, ২০০১-২০০৬); বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ, দিনাজপুর জেলা শাখা ( ২০১১-বর্তমান)। পুরস্কার: বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কার (২০১১); চিহ্ন পুরস্কার (২০১৩); দিনাজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার (লোকসংস্কৃতি) ২০১৪। স্ত্রী সিরাজাম মনিরা, দুই সন্তান হাসানুল হক সৌম্য ও মনীষা হক।