রাজেন্দ্রনন্দিনী উপন্যাসে নায়িকা নন্দিনী দীর্ঘাঙ্গী অপরূপ রূপবতী সংস্কারমুক্ত যুবতী মেয়ে। রাজেন্দ্রনন্দিনী বাবা-মায়ের আদরের মেয়ে এবং সে কারণে সে সকলের কাছে অধিক সমাদৃত নন্দিনী নামে। নায়ক প্রিন্স সদ্য পাশ করা ডাক্তার। এক সময় প্রিন্স একটি আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে মেয়ে রাজেন্দ্রনন্দিনীর সাথে পরিচয় হয় এবং আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় উভয়ে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়। নন্দিনীর সাথে আত্মীয় কাজিন কলেজের বাংলার প্রভাষক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাজন এর সাথেও ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে সত্য ও সুন্দরের আদর্শে। বিয়ের প্রস্তাব থাকলেও নন্দিনীর আসল ধ্যান-ধারণা বস্তির দরিদ্র অবহেলিত শিশু মেয়েদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলা- এই উদ্দেশ্যে একটি অবৈতনিক গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করে এবং সেই সাথে ছাত্রীদের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। ভালোবাসার পরিসমাপ্তি ঘটে বিয়ের মাধ্যমে, কিন্তু সতর্ক নন্দিনীর ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্যরত ছাত্রী অপর্ণা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে নন্দিনী ও প্রিন্স তাকে নিয়ে গাড়ি করে ক্লিনিকে যাওয়ার পথে অ্যাক্সিডেন্ট ঘটে। প্রিন্স ও ড্রাইভার ঘটনাস্থালেই মারা যায়, নন্দিনী স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলে। নন্দিনী অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে এই ভুল খবর পৌঁছায় রাজনের কাছে এবং রাজন তা শুনে ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে আত্মহত্যা করে। উপন্যাসে নায়ক-নায়িকা ছাড়াও বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে অসংখ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রোমাঞ্চকর সংলাপ, কথাবার্তা, বিয়ের আলোচনায় বৈচিত্র্যপূর্ণ মজার হাস্যরত্মক ঘটনা প্রবাহ, আছে অলৌকিক সত্য ঘটনা, সামাজিক অবক্ষয়ের বিভিন্ন চিত্র, শিক্ষার প্রকৃত আদর্শ। সম্মানিত হিন্দু ভাই-বোনদের মধ্যে প্রচলিত ‘ভাইফোঁটার’ মতো ‘বোনফোঁটা’র প্রচলনের বিস্তারিত বিবরণ উপন্যাসটিতে তুলে ধরা হয়েছে, যা হিন্দু ভাই-বোনদের মধ্যে এবং প্রতিটি পরিবারে এক অনাবিল আনন্দ বয়ে নিয়ে আসবে যার তুলনা বিরল।
স্কুল এবং কলেজ লাইফ কেটেছে ইন্ডিয়াতে। গ্রাজুয়েশনের পর ঢাকাতে সিটি ল কলেজে ল (আইন) পড়ি এবং ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় ডিস্টিংশনসহ উত্তীর্ণ হই। কর্মজীবনে তৎকালীন ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেড (ইউবিএল) এ অফিসার র্যাংকে যোগদান করি এবং জনতা ব্যাংক থেকে এজিএম হিসেবে অবসর গ্রহণ করি। ইতিপূর্বে চাকরিকালীন সময়ে দেশের বরেণ্য সঙ্গীত শিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমদ সাহেব এর নামে খিলগাঁও-এ সাংস্কৃতিক (সব ধরনের গান, নাচ, তবলা ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন এক্সিকিউটিভ কমিটির মেম্বার ছিলাম। অবসর গ্রহণ এর পর দেশের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান নিটল মটরস এর ব্যাংকিং ডিভিশনে এজিএম হিসেবে কিছুদিন কাজ করার পর দেশের একটি অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপ অফ ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর বৃহৎ গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে ডিজিএম হিসেবে চুক্তিভিত্তিক জয়েন করি। এরপর অপর একটি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে চুক্তিভিত্তিক কাজ করি। পরবর্তীতে দেশের একটি অন্যতম বৃহৎ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস বুক কর্ণার প্রাইভেট লিমিটেড-এ প্রশাসন ও একাউন্টসের দায়িত্বে প্রায় আট বছর কর্মরত ছিলাম। ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব ঘটলে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় স্থবির হয়ে পড়লে সাহিত্যকর্মে আত্মনিয়োগ করি। সামাজিক উপন্যাস, রহস্য উপন্যাস, বিস্ময়কর জীবনভিত্তিক ছোট গল্প, বিস্ময়কর ভৌতিক কাহিনী ইত্যাদি লেখায় ব্যাপৃত আছি। আমি ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা, স্ত্রী গৃহিণী। আমার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে জাতিসংঘের এফএও-তে এ্যাডমিন এন্ড ফাইনান্স এ্যাসিসট্যান্স হিসেবে দীর্ঘ পাঁচ বৎসরাধিক কাজ করার পর বর্তমানে আইওএম (ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন) এ কর্মরত। মেয়ে অস্ট্রেলিয়ান ডাক্তার, জামাই ইঞ্জিনিয়ার (ডক্টরেট) অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল গভ. এ কর্মরত এবং অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দা।