রাতের আকাশের কোনে শুকতারা জ্বলজ্বল করে জ্বলে ওঠে। তারাদের সাথে পাল্লা দিয়ে আগের মতো জমিদার বাড়ির আলো ঝলমল করে না। এত জৌলুস এখন আর নেই। মুকুন্দেরও সে ক্ষমতা নেই। অকম্পিতভাবে কয়েকটি বাতি জ্বালিয়ে রাখে। এমনি এক তারা ভরা রাতে পল্লবী দক্ষিণ দিকের ঘরটির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, সাথে অবশ্য একজন পরিচারিকা ছিল। হঠাৎ যেন শুনতে পেল একটা শব্দ ঘরটির ভেতর থেকে আসছে। জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢালার সময় যে শব্দ হয় তেমন। পরিচারিকাকে বললো, "মতির মা শুনতে পাচ্ছো? ভেতরে কি যেন একটা শব্দ; পানির।" মতির মা বেশ সাহসী মহিলা। এ কালের সবাই জানে। সে বলল, "কই শব্দ আম্মা! মনে হয় বৃষ্টি হইবো।" "এমন রাতে বৃষ্টি! কি যে বলো তুমি? আমি শুনলাম।" "আপনার মনের ভুল আম্মা। চলেন ঘরে যাই। আব্বার আইতে রাইত হইবো। হেই পর্যন্ত আমি থাকমু।" পল্লবীর মন কিছুতেই মানতে চাচ্ছে না যে ও ভুল শুনেছে। কারো অস্তিত্ব ও টের পেয়েছে! ভোরের বাতাসের সাথে একটা মিষ্টি গন্ধ ভেসে আসে। পল্লবীর খুব ভালো লাগে। কেমন একটা মাদকতা ছড়ানো সেই গন্ধে। সামনের বাগানে খুব একটা গাছ নেই। পল্লবী ভাবলো একটা মালী রাখবে। বাগানটাকে আবার সজীব করবে। পছন্দের গাছগুলো লাগাবে। যতদিন থাকবে এখানে নিজের মতো করে গুছিয়ে থাকবে। উঠানে একটা তুলসী গাছ লাগাবে। পূজোর ঘরটি খুলে সবার আগে সংস্কার করাবে। বাগানে অবশ্য বেশ পুরোনো বড় বড় বকুল আর চাঁপা গাছ রয়েছে। গন্ধটা চাঁপা ফুলের। জীর্ণভাবে যেন প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে এ গাছ কয়েকটি। পল্লবী গিয়ে বাগানের একটি গাছের কোণে বসে। মনটা ভালো লাগায় পূর্ণ। হঠাৎ গত রাতের কথা মনে পড়ে যায়। ও একটি শব্দ পরিষ্কার শুনতে পেয়েছে। মতির মা কি শুনতে পায়নি...?"
সাঈদা নাঈম। জন্ম ১৯৭৫ সালের ২৭ নভেম্বর। গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুর হলেও কয়েক জেনারেশন থেকে ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা। বাবা মায়ের প্রথম সন্তান। বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হোন পড়াশোনা চলাকালীন সময়ে ১৯৯৬ সালের ২৭ জুন। বিয়ের পর বাংলায় মাস্টার্স, এম ফিল এবং আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। পড়ার শেষ নেই তাই পি এইচ ডি করার ইচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন লেখক হওয়ার ভীষণ ইচ্ছে। লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে আগ্রহ থাকায় পড়তে পড়তে লিখেছেন চারটি বই লোকজ সংস্কৃতি নিয়ে। এছাড়া ছোট গল্প লিখতে পছন্দ করেন। ই বুকে খুব আগ্রহী। রকমারি ডট কম এ তার বই এবং ই বুক পাওয়া যাবে। এক ছেলে ও এক মেয়ে, স্বামী এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করেন। লেখার পাশাপাশি তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান এবং কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সহ অর্থ সম্পাদক। সবাইকে বই পড়ার আহ্বান সবসময় তিনি জানান। বাংলাদেশ নারী লেখক সোসাইটি তৈরি করেছেন তিনি সাহিত্যকে ভালোবেসে।