বইটিতে শিশু-কিশোর অধিকার রক্ষায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনসমূহ একসাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে ২০১৩ সালের শিশু আইনে শিশু-কিশোর অপরাধ বিচার প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে। এছাড়া আইনটি অধিকতর শিশু-বান্ধব করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে শিশু আইনের সংশোধনী এবং প্রাসঙ্গিক কেসসমূহ অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে শিশু-কিশোর বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশন সার্ভিস ও শিশু আদালতের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ১৯৬০ সালের প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স এবং ২০১৪ সালের শিশু আদালত সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি সংযোজন করা হয়েছে। শিশু-কিশোর অপরাধ বিচারে সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রবেশন ব্যবস্থা একটি কার্যকরী মাধ্যম। শিশু আইনে প্রবেশন সম্পর্কিত বিধান থাকলেও ১৯৬০ সালের প্রবেশন অফেন্ডার্স অধ্যাদেশ এখনো প্রচলিত আছে যা উপযোগী করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এই সনদের বিধানগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব রয়েছে বাংলাদেশের। এই সনদে শিশুদের প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে ভিন্ন মানবসত্তা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুতরাং শিশুর জন্য প্রয়োজন বিশেষ যত্ন আর সুরক্ষা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক অগ্রগতি অর্জন করলেও এখনো পুরোপুরি অঙ্গীকার পূরণ করতে পারেনি। তৃতীয় অধ্যায়ে এ বিষয়সমূহ বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে।
চতুর্থ অধ্যায়ে শিশু-কিশোর সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক দলিলসমূহ-১৯৮৫ সালের কিশোর বিচার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতিসংঘ ন্যূনতম মানদÐ বিধিমালা (বেইজিং বিধিমালা), ১৯৯০ সালের কিশোর অপরাধ প্রতিরোধের জন্য জাতিসংঘ নির্দেশনা (রিয়াদ নিদের্শনা), ১৯৯০ সালের স্বাধীনতা বঞ্চিত কিশোর অপরাধীদের সুরক্ষা সংক্রান্ত জাতিসংঘ বিধিমালা (হাভানা বিধিমালা), ১৯৯০ সালের বিনা হেফাজত প্রতিবিধান সংক্রান্ত জাতিসংঘ ন্যূনতম মানদন্ড বিধিমালা (টোকিও বিধিমালা) সংযোজন করা হয়েছে।
এছাড়া পঞ্চম অধ্যায়ে শিশু-কিশোর বিচার ব্যবস্থার প্রাসঙ্গিক আইন হিসেবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন) ২০২০, শিশু আইন (সংশোধন) ২০১৮, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন ২০১১, কিশোর ধুমপান আইন, ১৯১৯, ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এবং দন্ডবিধি ১৮৬০ এর প্রাসঙ্গিক বিধানসমূহ সন্নিবেশিত হয়েছে।
বইটিতে শিশু-কিশোর অপরাধ বিচার সংক্রান্ত জাতীয় আইন, আন্তর্জাতিক সনদ ও বিধিমালা একত্রীকরণের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষামূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটাতে নিঃসন্দেহে মূল্যবান ভূমিকা রাখবে।