গৃহস্থালির মাঝে ডুবতে ডুবতে নিজের মনের কিছু কথা কখনো কখনো কেমন করে যেন পূর্ণতা পায় না। তাই আপন স্বরই আপন মনের বিদ্রোহী হয়ে আঁতুড়ঘরে খুন হয়েছে, নয়তো আয়ুর সীমাবদ্ধতায় অন্ধকারে প্রবিষ্ট হয়ে গুমরে মরছে। মূলত আমাদের কথাগুলো যখন ইথারে ভাসে তখন আশপাশের পরিস্থিতি ও অবস্থান চোখ বন্ধ করে শোনে। তারপর সত্যনিষ্ঠ কথাগুলো ধরে এনে নির্যাস নিঙড়ে ছাড়পত্র দিলে অনেক শান্তশিষ্ট ও নিষ্পাপ সবুজ কথা অঙ্কুরেই ফিরে যায় অধোমুখে, বুক ভার করে। অথচ প্রয়োজনীয় কথাগুলো তো সময়ের দাবি। কিন্তু প্রয়োজনীয় এ দাবি বৈপরীত্যের শৃঙ্খল আর তার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে নিঃসাড় হয়ে পড়ে। যে কথাগুলো কণ্ঠস্বর হয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণার্থে সজীব ও জাগ্রত হয়ে ওঠার কথা সে কথাগুলো যদি শৃঙ্খলিত হয়ে পড়ে তাহলে তা স্বকীয়তা হারিয়ে অন্তরালে নির্বাসিত হয়। এ স্বর হলো সুবোধের, এ স্বর হলো মানবিক উৎকর্ষতার, এ স্বর সৃজনের। তবু সময়ের বৈপরীত্যে আর রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘেরাকলে পড়ে সুবোধের সে স্বর শব্দময় হয়ে উঠতে না পেরে অন্তরীণ হয়ে থাকে মুক্তির অন্বেষায়। সময়ে মনের কথা বলতে না পারার বন্ধ্যা অবস্থাকে উপমা আর প্রতীকে বর্ণময় করার প্রয়াস যুগে যুগে করে এসেছেন কবিরা। কবির এ প্রচেষ্টা নিরর্থক নয়, আন্তরিক।