সেপ্টেম্বর ২০১৯। মিষ্টি হেমন্তের এক ঝলমলে সুন্দর সকাল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের প্রখ্যাত শহর শিকাগো, যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী। ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী এই শহর, স্থাপনাশিল্পের এক সূতিকাগার। এই শহরে বাঙালি অধ্যুষিত এক এলাকায় একটি দ্বিতল বাড়িতে বসবাস করে ফাহিম। পেশায় একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী। আজ সকাল থেকেই ফাহিমের মধ্যে এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছে। কেন জানি এক অজানা ভালোলাগা গ্রাস করে রাখল তাকে সারাক্ষণ। সারা দিন ভীষণ উত্তেজনায় কাটল তার। হঠাৎ করে এই ভালোলাগার কারণ একটা টেক্সট মেসেজ। সকালে ঘুম ভাঙার পর বিছানায় শুয়ে শুয়ে আলসেমি করছিল ফাহিম-মেসেজের নোটিফিকেশন এল তখন। সে ফোনটা সামনে নিয়ে দেখল- সিমির মেসেজ। সে লিখেছে, 'হাই, তুমি কি শিকাগোতে আমার একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারবা?' ফাহিম বেশ কিছুক্ষণ মেসেজটার দিকে তাকিয়ে রইল। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে সে উত্তর দিল, 'চেষ্টা করে দেখতে পারি। কী ধরনের কাজ তুমি খুঁজছো?' 'জানি না। যে-কোনো কাজ-আমার পক্ষে করা সম্ভব এমন কোনো কাজ।' 'তুমি শিকাগোতে আসছ? তোমার না আসার কথা ছিল?' 'আগামীকালই যাচ্ছি। দুপুর সাড়ে বারোটায় আমার অ্যারাইভাল।' 'তাহলে তো ভালোই হলো। আমাদের কি দেখা হতে পারে?' 'বুঝতে পারছি না। আমি মাত্র একদিনের জন্যে যাচ্ছি। পরেরদিনই আবার ফিরে আসতে হবে।' 'উফ!'
জন্ম ও বেড়ে ওঠা ফরিদপুর শহরে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। ফরহাদ হোসেন—একজন লেখক, চিত্রনাট্যকার, নির্মাতা, প্রযোজক, সঞ্চালক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক। শিকাগোর বিখ্যাত ডিপল ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ম্যানেজমেন্ট এবং ইনফরমেশন সিস্টেমস-এ স্নাতকোত্তর, বর্তমানে আমেরিকার একটি প্রখ্যাত কোম্পানীতে আইটি কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত শশব্যস্ত ফরহাদ হোসেনের সিংহভাগ সময় কাটে লেখালেখি এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন ধারার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অবাধ বিচরণকারী ফরহাদ হোসেন মূলত নিরীক্ষাধর্মী চিত্রনাট্য লেখার মাধ্যমে তার লেখালেখির জগতে পদচারণা শুরু করেন। এক দশকেরও অধিক সময় ধরে তিনি চিত্রনাট্য ও গল্প লিখে চলেছেন। থেমে থাকে নি উপন্যাস লেখার কাজও। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চারটি। সমকালীন গল্পগ্রন্থ ‘তৃতীয় পক্ষ’, ছোট গল্পের সংকলন ‘ধূসর বসন্ত’ এবং উপন্যাসিকার সংকলন ‘…এবং একদিন হঠাৎ’। ‘স্বপ্নজাল’ তাঁর প্রথম উপন্যাস। বর্তমানে স্ত্রী, এক কন্যা এবং এক পুত্রকে নিয়ে বসবাস করছেন টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে।