শহর আর ক্যান্টনমেন্টের গা ছুঁয়ে কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাইরে দু সার মাটির ঘর ... একে অপরের গায়ে হুমড়ি খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একেবারে আলাদাভাবে গড়ে উঠেছে পল্লীটি। ধাঙড়, মুচি, নাপিত, ধোপা, ভিস্তিওয়ালা, ঘেসুড়ে-এমনি সব লোকেদের বাস এখানে ... নীচের তলার জীবেরা সব ... হিন্দু-সমাজ যাদের দূরে ঠেলে দিয়েছে, অস্পৃশ্য, অশুচি, অপাঙক্তেয় করে রেখেছে যাদের। সমাজের অদ্ভুত এরা। পল্লীটির পাশ ঘেঁষে বয়ে চলেছে একটি সংকীর্ণ মজা নদী। এককালে যখন স্রোতবহা ছিল তখন এর জল ছিল স্বচ্ছ। আজ সরকারি টাট্টিখানার নোংরাতে এ মজা নদী ভরে থাকে। কর্দমাক্ত নদীটির দুই পাড়ে রোদে শুকোতে দেওয়া হয় সারি সারি কাঁচা চামড়া, এখানে ওখানে পড়ে থাকে মড়া কুকুর বেড়াল, আর তারই পাশে রাজ্যের যত গোবর কুড়িয়ে গাদা করে রাখা হয়েছে ঘুঁটের জন্য। সব কিছু মিলে একটা পচা, ভ্যাপসা গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে থাকে। দম আসে আটকে। তার উপর আবার বর্ষার জল জমা হয়ে এঁদো ডোবার সৃষ্টি হয়েছে। সেখান থেকেও আসছে একটা বিশ্রী পচা দুর্গন্ধ। এখানে ওখানে ছড়ান বিষ্ঠা আর গোবর সর্বত্র নোংরামি আর ... কদর্যতার ছাপ। অপরিষ্কার আর অপরিচ্ছন্ন, দুঃখ আর দারিদ্র্যের নগ্ন চিহ্ন।