বৃহৎ বাঙালি সমাজের নৈতিক আদর্শবাদী যুগের শেষ প্রতিনিধি এবং রোমান্টিক যাপনের অন্তিম জাতক ড. মনিরুজ্জামান, বরিষ্ঠ ভাষাবিজ্ঞানী, পূর্ববঙ্গের সাংস্কৃতিক জনপদ আদিয়াবাদ, রায়পুরা, নরসিংদীর সন্তান; জন্ম ও শৈশব কাটিয়েছেন অখ- বঙ্গদেশের পশ্চিমাংশে। কর্মসূত্রে ছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার সাগর-মিথিলা ভূমির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ ভারত ও বিলাতের নামজাদা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থেকে অকাতরে আহরণ করেছেন তাত্ত্বিক ও ফলিত জ্ঞান, যা ভাষা, সাহিত্য ও ফোকলোর বিষয়ে ৩৫টি বই ও শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধে বিবৃত।
‘পুরুষ পরম্পরা’ তাঁর একমাত্র গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭০ সালে। প্রকাশনা-শিল্পে ৭০ বছরের ঐতিহ্যস্নাত ‘স্টুডেন্ট ওয়েজ’ কর্তৃক অর্ধ-শতাব্দী পর গ্রন্থটির পুনঃ প্রকাশ বাংলা সাহিত্যের ঐতিহাসিক ঘটনা। ‘পুরুষ পরম্পা’র মতো সুদীর্ঘ বছর জাগ্রত থাকার সৌভাগ্য খুব কম বইয়ের ভাগ্যেই জুটেছে।
পনেরটি সুডৌল গল্পে মেদহীন, বাহুল্যবর্জিত ভাষায় অঙ্কিত হয়েছে জীবনের খ--বিখ- আখ্যান। যদিও আদর্শবাদ প্রধান উপজীব্য, তথাপি আর্থ-সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে শ্লেষ, কৌতুক, বিদ্রপ আর জীবনসংগ্রামের লুক্কায়িত উপাখ্যান উন্মোচিত করেছে গল্পগুলো। সমকালীন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রবীণতম শিক্ষাবিদের গল্প কাঠামো, শৈলী, আঙ্গিক, উপমায় নিজস্ব ঘরানার নির্মাতা এবং অবশ্যই বাংলা কথাসাহিত্যের শিল্পিত সম্পদ।