মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে যাঁরা বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন তাঁদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। জাতীয় চার নেতার একজন সৈয়দ নজরুল ইসলামের সুযোগ্য পুত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০০১ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। যখন আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার হন, তখন সৈয়দ আশরাফুল আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভা গঠিত হলে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনরায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। পরে তাঁকে সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিছুদিন তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রীও ছিলেন। পরে আবার তাঁকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে যেমন তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে, তেমনই সাধারণ মানুষের কাছেও তিনি বেশ গ্রহণযোগ্য ছিলেন। আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটময় মুহূর্তে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জীবন ও রাজনীতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এই বই তাঁর জীবন ও কর্মের ওপর মূল্যায়ন, স্মৃতিচারণ ও সাক্ষাৎকার নিয়ে। সেই হিসেবে বইটি একটি ঐতিহাসিক দলিলও।
লেখক, গবেষক ও সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ’র জন্ম ২৬ জানুয়ারি ১৯৮৪ কিশোরগঞ্জে। কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর করেন। পালন করেছেন বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বর্তমানে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বই-বিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘এবং বই’ ও নদী-বিষয়ক অনলাইন পত্রিকা ‘রিভার বাংলা ডটকম’ এর। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা আট। প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘স্বপ্ন ও একটি গ্রাম’ প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৩ সালে, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘সেদিন বৃষ্টি ছিল’ (২০১৫), ও তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘চিরকুট’ (২০১৮)। এরপর প্রকাশিত হয় গবেষণা-জীবনী গ্রন্থ ‘সৈয়দ নজরুল ইসলাম: মহাজীবনের প্রতিকৃতি’ (২০১৮), ‘বাংলার মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী’ (২০২০)। সম্পাদনা করেন ‘ফজলুল হকের গল্পসংগ্রহ’ (২০২০), ‘সংবাদপত্রে সৈয়দ নজরুল ইসলাম’ ও নদী বিষয়ক গ্রন্থ ‘প্রিয় নদীর গল্প’(২০২১) ২০১৯ সালে ‘সৈয়দ নজরুল ইসলাম: মহাজীবনের প্রতিকৃতি’ গ্রন্থের জন্য প্রবন্ধ, গবেষণা ও নাটক বিভাগে কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার অর্জন করেন।