এই বইটি আমাদের আশার কথা বলবে। একজন মানুষের মানসিক অসুস্থতা থাকলেই জীবন থেমে যাবার নয় সে কথা বলবে। মানসিক অসুস্থতা লজ্জার, ভয়ের বা লুকিয়ে রাখবার বিষয় নয়, সেই সাহস দেবে।
বইটি পড়লে আপনি নিজের অনেক আচরণের অন্তর্নিহিত কারণ ও তার প্রভাব সম্বন্ধে পরিষ্কার ধারণা পাবেন এবং সেইসাথে বুঝতে পারবেন আপনার প্রিয়জনদের অবোধ্য আচরণ। যা হয়তো পরিবারে অশান্তি বা অপ্রীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করছে কিংবা হয়তো আপনার সন্তানের বা আপনজনের কোনো আচরণ আপনাকে চিন্তিত করে তুলছে সেটাও এই বই পড়ে বুঝে নিতে পারেন। তবে একটি বিষয়ে অত্যন্ত মনোযোগী হতে হবে, যেন আপনি নিজেকে এই ব্যাধি দ্বারা চিহ্নিত না করেন। অর্থাৎ নিজেকে বা অন্যকে ‘লেবেল’ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বইটি পড়ে কোনো এক বা একাধিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধির সাথে নিজের আচরণের মিল খুঁজে পেলে সঠিক চিকিৎসার শরণাপন্ন হবেন- এটাই প্রত্যাশা।
নিজেকে ব্যাধি দ্বারা চিহ্নিত করলে সুস্থ হয়ে ওঠবার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যেতে পারে। কারণ আক্রান্ত ব্যাক্তি তখন ব্যাধির সাথে নিজেকে সংযুক্ত করে ফেলতে পারে, আর সেই কারণে ব্যাধির কাছে আনুগত্য স্বীকার করার প্রবণতা দেখা দেয়।
অন্যদিকে আরেকজনকে তার ব্যাধি দ্বারা চিহ্নিত করলে কিংবা তিরস্কার করলে একটি অমানবিক কাজ করা হবে। কাছের মানুষের ক্ষেত্রে তাকে সাহায্য করার জায়গায় দূরে ঠেলে দেয়া হবে। এতে প্রিয় মানুষটির সাথে দূরত্ব বাড়বে, সম্পর্কও শেষ হয়ে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের ব্যাধি তার অপরাধ নয়। অসুখের শিকার, সুচিকিৎসার মাধ্যমে তাঁদের সুস্থ করা সম্ভব, তাঁদের সুচিকিৎসার আওতায় আনা সবার দায়িত্ব।