হতাশায় ডুবে যাওয়া রিনির ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনী অ্যালবাম- কবিতা ও তুমি। ঘুরে দাঁড়ানোর পথে রিনির সঙ্গী হয় ভালোবাসার মানুষ। কবিতার পংক্তিমালা আর ছন্দ হয় রিনি-কবিরের ভালোবাসার যোগসূত্র। কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে, লেখকের লেখা মোট উনিশটি ছড়া ও কবিতা স্থান পেয়েছে এই উপন্যাসে। কবিতা এই উপন্যাসটির কাহিনী বিস্তার, মনের ভাব প্রকাশ ও পরিণতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়াও কবিতাই দূর করে রিনি আর কবিরের দূরত্ব। কাছে টেনে আনে রিনি-কবিরকে। তারও আগে, রিনি চৌধুরি একজন বিলেত প্রবাসী বাংলাদেশী। একজন স্বভাব কবি, মা, কন্যা ও সহোদরা। প্রবাসী রিনি এক বুক আশা নিয়ে ফিরে যায় স্বদেশে। কিন্তু ওর ঠাঁই হয় না অচেনা হয়ে যাওয়া নিজ দেশে। আরো একবার প্রমাণ হয়, দীর্ঘদিনের প্রবাসযাত্রা যেন এক একমুখী যাত্রা! প্রবাসীদের ঘরে ফেরার ব্যর্থ যাত্রায় শামিল হয় রিনি চরিত্রটি। কন্যা ও সহোদরা চরিত্র হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ হতে দেখে সে। থমকে যায় ওর জীবন। কিন্তু জীবন থামবার নয়, সে অবিরাম। কোনো কোনো সময় শেষ থেকেই আবার শুরু। উপন্যাসটির মূল চরিত্র রিনি চৌধুরির জীবনে সেরকমই ঘটে। ওর জীবন যখন অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে তখন আলো হাতে এগিয়ে আসে কেউ। জীবনের এই গল্পে রিনির সাথে আছে প্রজাপতির মতো ওর দুই জমজ মেয়ে সোনি-সোফি। বিলেতি বাংলাদেশী সমাজের অত্যন্ত জনপ্রিয় তরুণ প্রতিভা কবির মালিক এবং আরো অনেকে। যারা আমার ‘কাস্টডি’ উপন্যাসটির সাথে পরিচিত তারা এই কাহিনীতে পুনরায় সাক্ষাৎ পাবেন শাম্মি-শাহান, মিম-খুশবুর। কাস্টডি উপন্যাসে কিছু প্রশ্নের জন্ম হয়েছিল যার উত্তর মিলে যাবে এই উপন্যাসে। কাস্টডি’র কিছু বিষয় আরো পরিষ্কার হওয়ার প্রয়োজন ছিল যা হয়েছে ‘অ্যালবাম কবিতা ও তুমি’ উপন্যাসে। উপন্যাসটি একাধারে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ উপন্যাস এবং কাস্টডি উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্ব।
তাসনুভা সোমা একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশী লেখক। তার জন্ম, পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর ঢাকা শহরে। এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে। মাতৃভূমি ছেড়ে বিলেতে আসার পর উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন ব্যবসায়িক প্রশাসনে। এছাড়াও ডিপ্লোমা করেছেন বেশ কয়েকটি বিষয়ে। সন্তান ও পারিবারকে সময় দেয়ার উদ্দেশ্যে এক সময় সরে আসেন কর্মজীবন থেকে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিলেতে বসবাস করলেও, বাংলা ভাষার প্রতি অপরিসীম টান থেকে বাংলায় সাহিত্য চর্চা করে গেছেন নিয়মিত। ছোটবেলা থেকেই লেখার অভ্যাস তার। তবে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ২০১৯সালে। শখ থেকে তার লেখার শুরু এবং লিখছেন সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়। পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখা ছাড়াও লিখছেন উপন্যাস, ছোটোগল্প, বড়গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা ও ভ্রমণ কাহিনি। লেখকের পছন্দের বিষয়ের মধ্যে আছে মানবজীবন ঘেষা ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং অর্থনীতি। লিখতে ভালবাসেন চারপাশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, ইতিহাস, মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না নিয়ে। বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে তার লেখা দেড় শতাধিক কলাম ছাড়াও ছাপা হয়েছে ভ্রমণ কাহিনি, ছোট গল্প ও প্রবন্ধ।