আমরা মিডিয়ার রাক্ষুসে প্রভাবের যুগে বাইচা আছি, এবং আমার মনে হয় এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভালো হইল দর্শকদের মধ্যে ধইরা নেওয়া রিয়ালিটিগুলারে নিয়া সংশয় তৈরি করা। এটাই আসলে আমি করতে চাই। শুধুমাত্র খারাপ সিনেমাই সবকিছুর উত্তর আর ব্যাখ্যা দিতে চায়। কিন্তু বাস্তব জীবন তো অনেক আলাদা। ...আমরা আসলে নিজেদের নিয়াও এতোকিছু জানি না। আমরা যখন জার্মানি আর অস্ট্রিয়ার নাজি পিরিয়ড নিয়া কথা বলি, মানুষ খুব তাড়াতাড়ি দাবি কইরা বসে যে আমি হইলে কখনোই এমনকিছু করতাম না! কিন্তু আমরা তো সেখানে ছিলাম না, আমরা আসলে যেকোন কিছু কইরা ফেলতে পারতাম - আমরা প্রত্যেকেই। আসলে সিচুয়েশনের কারণেই এমন হইয়া যাইতে পারতো । আর এটাই আমার কাজের মূল জিনিস - যে মিডিয়ার এই ডিক্টেটরশিপের দিনে জ্ঞান আর বাস্তবতা বইলা যেসব জিনিসরে দেখানো হয় সেগুলা কতটুকু সন্দেহের বিষয়, সেসব নিয়া আসলে আমরা কত কম জানি, এই ব্যাপারগুলারে রিভিল করা।
ফিল্মের মধ্যে টাইমিং এর ব্যাপারটা পুরাপুরি সিধা রাখতে হয়, কারণ এখানে টাইমিংই সবকিছু। সাহিত্যে আবার এই ব্যাপারটা আলাদা। আমার খুবই প্রিয় একটা বই, মুসিলের 'দ্যা ম্যান উইথআউট কোয়ালিটি'তে দেখা যায় টাইমিং এখানে এতো ইম্পর্টেন্ট কিছু না। আপনে যদি প্রত্যেকটা ছোট ছোট ডিটেইল আর বিভিন্ন কাহিনীর অংশে আগ্রহী না হন, তাইলে উপন্যাস পড়ার তেমন কোনো ফায়দা নাই। অন্যদিকে একটা সিনেমা হয় খালি দেড় থেকে দুই ঘন্টা, এই সময়টার মধ্যেই আপনারে পুরা গল্পটা কইতে হবে। প্রত্যেকটা সিংগেল মিনিটরেও কাজে লাগাইতে হয়। এটাই সিনেমা বানানির আর্ট আসলে, এটা কইতে পারা যে - কোন জিনিসটা কাজ করবে আর কোনটা করবে না।…
যেসব মানুষ এমনসব কাজ করতে চায় যেটা নিয়া তাদের সরাসরি কোন জানাবুঝা নাই, ওদের যে রেজাল্টটা ভালো আসে না, সেটা আমি সবসময়ই খেয়াল করছি। ওরা হয়তো আফগানিস্তান নিয়া কথা বলবে, বা আফ্রিকার বাচ্চাদের নিয়া - কিন্তু দিনশেষে ওরা খালি টিভিতে যা দেখায় বা পত্রিকায় যা লেখে- অদ্দুরই জানে। আর এদিকে ওরা ভান কইরা যায়, এমন কি নিজের কাছেও তারা ভান করে যেন তারা যা বলতেছে সেসব তারা সবই বুঝতেছে। কিন্তু এই ব্যাপারটাই বুলশিট। আমি মোটামুটি এটাই মানি যে আমার চারপাশে যা হইতেছে, আমি ডেইলি লাইফে যা দেখতেছি আর বুঝতেছি, আর জীবনে যেসব অভিজ্ঞতা পাইছি এই পর্যন্ত - এর বাইরে আমি আর কিছু জানি না। ...
...একজন নগ্ন নারী সবসময়ই নগ্ন নারী, কিন্তু ভ্যালাযকেজের নগ্ন নারী তো পিকাসোর নগ্ন নারীর চেয়ে আলাদা। ফর্মটাই ঠিক কইরা দেয় একটা আর্টরে, এটাই অন্য শিল্পীদের কাজ থেকে আলাদা কইরা আইডেন্টিফাই করে ওই কাজরে। প্রত্যেকেই একজন নগ্ন নারীর ছবি আঁকতে পারে, আর্টের ক্ষেত্রে এটা খুব কমন। তেমনি গল্পও হইলো পিছনের অনুপ্রেরণা, কিন্তু এটাই আসল জিনিসটা না। আপনি খুবই মিনিংফুল একটা বিষয় নিয়া খুবই বিশ্রি একটা মুভি বানাইতে পারেন, অথবা আপনার দাদীর ক্যাফে নিয়া চমৎকার সুন্দর একটা মুভি বানাইতে পারেন। এমন ভুরি ভুরি উদাহরন আছে - এমন অনেক বই যেগুলা আপাতদৃষ্টিতে অনেক হালকা, ভাসা ভাসা জিনিসগুলা নিয়া কাজ কইরাও পুরা দুনিয়ারে এরমধ্যে আনতে পারছে।