সনেট, মহাকাব্য, ক্রমবর্ধমান উত্তরাধুনিক ভাবধারা ও কবিতার বিচিত্রতা নির্মাণে তিনি জীবনের বহুবিধ দিক স্পর্শ করেছেন । বাংলা কবিতাকে নিয়ে গেছেন মাতৃভূমির মানচিত্রের বাইরে । অনুবাদের মাধ্যমে নানা দেশে সমাদৃত এই কবিকে ইয়োরোপ দিয়েছে হোমার পুরস্কার । মার্কিন অধ্যাপক নিকোলাস বার্ক্স লিখেছেন, “তিনি শুধু সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব নন, তাঁর প্রজন্মের প্রধানতম কবি।” শহীদ কাদরী মন্তব্য করেছেন, “হাসানআল আব্দুল্লাহ নব্বই দশকের অন্যতম প্রধান কবি।” আর পশ্চিম বঙ্গের কবি-সমালোচক জ্যোতির্ময় দত্ত তাঁকে “বাংলার ভূমিজ এক নতুন শক্তি,” বলে উল্লেখ করেছেন। গ্রিক কবি মারিয়া মিস্ট্রিয়টির ভাষায় তাঁর কবিতা “দর্শনাশ্রয়ী, অসংখ্য প্রতীকে পরিপূর্ণ।”
কবিতার মতো গদ্যেও যে নতুন সৌন্দর্য নির্মাণ করা যায় এই ভাবনায় বিশ্বাসি হয়ে তিনি লিখেছেন গল্প-উপন্যাস-নাটক-প্রবন্ধ-ভ্রমণকাহিনি । তাঁর প্রকাশিত সাতটি প্রবন্ধ-গ্রন্থ থেকে এই বইয়ের রচনাগুলি নির্বাচন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কবিতা, কবিতার ছন্দ, কাব্যসমালোচনা, নারীর অগ্রযাত্রা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, এবং ব্যক্তি ও সমাজ ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর প্রবন্ধগুলি ইতিমধ্যে সমাদৃত হয়েছে। এই বইয়ের ভূমিকায় তিনি উল্লেখ করেছেন, “আমি প্রবন্ধ লিখেছি নিজেকে বিকশিত করতে, যে বিষয়ে লিখেছি সেই বিষয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন করতে । , তবে, ভাষার সাথে কখনো আপোষ করিনি । এই ব্যাপারে যেসব লেখককে অনুসরণযোগ্য মনে করেছি তাঁরা হলেন শিবনারায়ণ রায়, আহমদ শরীফ, হুমায়ুন আজাদ, আরজ আলী মাতুব্বর প্রমুখ।” বাংলা ভাষার প্রধানতম এই প্রাবন্ধিকদের মতোই হাসানআল আব্দুল্লাহর প্রবন্ধও পাঠকের চিন্তার খোরাক যোগাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস ।