মুখবন্ধ - ‘ও মাদবরের বউ, এই ভরদুপরে মাইয়্যারে লইয়া যাও কই ? - আর কইয়েন না চাচাজি, হগলেই কয় মাইয়্যারে জিনে ধরছে, পুরুষ জিনে, জোয়ান মাইয়্যা ত। তাই কবিরাজের কাছে যাইতাছি তাবিজ আনতে।’ - উক্তিগুলো ‘একলা আকাশ’ এর অন্যতম চরিত্র করিম মাদবরের স্ত্রী নাজমা বেগম এবং রমিজ মিয়ার। ‘একলা আকাশ’ একটি রোমাঞ্চকর উপন্যাস যার প্রতিটি শব্দে রয়েছে শিহরণ। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র আকাশ ও নীলা। নীলা সোহাগি গাঁয়ের করিম মাদবরের মেয়ে। দেখতে অপূর্ব সুন্দরী, লতার মতো লিকলিকে বাড়ন্ত শরীরে সমুদ্রের উচ্ছল ঢেউয়ের মতো যেন বইছে রূপের ঢেউ। তার দীঘল কালো কেশের বেণি যেন মাটিকে স্পর্শ করে । নীলা তার দীঘল কেশের বেণি ছেড়ে লাল শাড়ি পরে যখন গাঁয়ের মেটো পথ ধরে হাটে তখন হাজারো যুবকের হৃদয়ে ঝড় ওঠে। শুধু যুবকদের হৃদয়েই নয়, নীলাকে প্রথম দেখাতেই আকাশের জন্য পছন্দ আসমা চৌধুরীর । আসমা চৌধুরী শহরের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী আকরাম চৌধুরীর স্ত্রী। তবে গত তিরিশ বছরেও তাঁদের সম্পর্কটা কোনো একজায়গায় স্থির হয়ে আছে। অবশ্য তার কারণ-ও আছে। আসমা চৌধুরী ছিলো করিম মাদবরের স্কুল জীবনের বন্ধু¡। বন্ধুত্ব থেকেই প্রণয় আর সেই প্রণয় বিয়ের আসর অব্দি গড়ালেও শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়নি। তাঁদের বিয়েটা না হওয়ার পিছনে এই আকরাম চৌধুরীই দায়ী। বিয়ের প্রথম প্রথম আসমা চৌধুরী, আকরাম চৌধুরীকে সয্য করতে না পারলেও সময়ের ব্যবধানে সবই মেনে নিয়েছে। আকরাম চৌধুরীকে মেনে নিলেও হৃদয়ের দুরত্ব তাঁর আজও রয়ে গিয়েছে। আকরাম চৌধুরীর কারণে করিম মাদবরের সাথে তাঁর বিয়ে না হলেও তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিলো অটুট। তাঁদের সেই বন্ধুত্বকে আরো শক্ত করার জন্য আসমা চৌধুরী, করিম মাদবরকে প্রস্তাব দেয় আকাশের সাথে নীলাকে বিয়ে দেবার। আকাশ, আসমা চৌধুরীর একমাত্র ছেলে, বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করে বাবার হাতে গড়ে তোলা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ' আজমত চৌধুরী ' বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম পরিচালক ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেয় । এরকম যোগ্য পাত্রের হাতে নীলাকে তোলে দিতে পারাটা করিম মাদবরের কাছে যেন এক বাড়তি পাওয়া। তাই আসমা চৌধুরীর প্রস্তাবে সে আকাশের সাথে নীলার বিয়ে দিতে রাজি হয়, কিন্তু বেঁকে বসে নীলা। নীলা পড়াশোনা শেষ না করে বিয়ে করতে রাজি নয়। নীলা বেঁকে বসলেও করিম মাদবরের এক কথা, বিয়ে তাকে করতেই হবে। এদিকে আকাশ তার মা আসমা চৌধুরীর কথা অনুযায়ী শহর থেকে সোহাগি গাঁয়ে ছুটে আসে নীলার হাতে আংটি পরানোর জন্য। করিম মাদবর সকাল থেকেই আকাশের সাথে নীলার বিয়ের বাগ্দানের সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে ব্যস্থ হয়ে পড়ে। বাগ্দান ঠেকাত নীলা কোনো উপায়ন্তর না দেখে সহযোগিতা চায় মা রোকেয়া বেগমের। রোকেয়া বেগম-ও এ বিয়েতে রাজি নয়। সে-ও চায় না, করিম মাদবরের একসময়ের ভালোবাসার মানুষ আসমা চৌধুরীর ছেলে আকাশের সাথে নীলার বিয়ে হউক। তাই নীলা সহযোগিতা চাইলে রোকেয়া বেগম তাকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবার পরামর্শ দেয়। মা রোকেয়া বেগমের পরামর্শ অনুযায়ী নীলা বাড়ি থেকে পালায়।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, প্রথমেই আমি জহির খান আমার হৃদয়ের গহিন থেকে আপনাদেরকে জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন। আমি মূলত ব্যাংকার হলেও লেখালেখি আমার নেশস। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে আমি দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক এবি ব্যাংকে যোগদানের মাধ্যমে আমার কর্মজীবন শুরু করি। লেখার হাতেখড়ি আমার সেই শৈশব থেকে। তখন থেকেই লেখালেখির প্রতি নেশা ছিল আর সেই নেশাটা এখন প্রথম প্রিয়ার মতো হৃদয়ের গহিনে জায়গা করে নিয়েছে। সেই নেশার সাথে আপনাদের অপরিসীম ভালোবাসা আমাকে লেখার প্রতি দায়বদ্ধতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আর তাই তো আমি সৃষ্টি করতে পেরেছি রোমাঞ্চকর উপন্যাস ' মেঘের আড়ালে মেঘ ' ডিটেকটিভ ' গোয়েন্দা রাহুল ' কিশোর উপন্যাস ' রাহুলের আদালত ' এর মতো পাঠকপ্রিয় বই। ' নতুন করে কী আর পুড়াবে আমায়, আমি তো পুড়ছি সেদিন থেকে যেদিন তোমার দীঘল কালো আউলা কেশের স্পর্শে জেগেছিল আমার সুপ্ত হৃদয় ' এটি রোমাঞ্চকর উপন্যাস ' মেঘের আড়ালে মেঘ ' এর নায়ক মেঘের উক্ত। এরকম অজস্র উক্তির মাধ্যমে সাজিয়েছি ' মেঘের আড়ালে মেঘ।' আপনাদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা থেকেই এবার তিনটি বই আসছে ইনশাআল্লাহ। বই তিনটির এক. রোমাঞ্চকর উপন্যাস ' একলা আকাশ' দুই. থ্রিলার ' আগুন চোখের মেয়ে' এবং তিন. শিশুতোষ ' বানরের সাথে সন্ধি।' আমার বিশ্বাস তিনটি বই এই আপনাদের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ প্রিয় বন্ধুগণ। জহির খান।