মা নামক আবেগীয় মহিরুহ সার্বজনীন,মা সকলের। মা আপনার গল্প,আমার গল্প, সবার গল্প, আমাদের সমাজের গল্প। বইটির কোনো না কোনো জায়গায় আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন। বইটি পড়লে মনে হবে, আরে! এতো আমার জীবনের গল্প, এটাতো আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা। সন্তানের জন্ম থেকে ‘মা’ নিরলসভাবে কাজ করে যায় ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দুর্নিবার এক প্রত্যয়ে। কখনো সে সফল হয়, কখনো নিদারুণ দুঃখের দুঃসহ কালো মেঘ এসে গ্রাস করে জীবনের গতিপথ। জীবনযুদ্ধে বারবার হোঁচট খেতে থাকে সন্তান। সন্তানের জীবনের এই যুদ্ধে কখনো পিছন থেকে মহিরুহের মতো, কখনো সামনে থেকে প্রবল বিক্রমে পথ দেখান ‘মা। হেরে যেতে থাকা সন্তানের জীবনে নিজস্ব জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় আবারও করে তোলেন প্রাণবন্ত। সন্তানও বিমুগ্ধ নয়নে চেয়ে দেখে, তার ‘মা’ পাশে থাকলে এই পৃথিবীর কোনো কিছুই অসাধ্য নয়। মায়ের এই স্নেহময় সাহচর্যে নিজেকে ফিরে পায় সন্তান। পুনরায় ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন সংগ্রামে। একসময় গড়ে তোলে কাংখিত জীবন। স্বপ্নের পাখিরা ডানা মেলে, মুক্ত বিহঙ্গের মতো জীবনের আকাশে উড়তে থাকে সে। মায়ের দেখিয়ে দেওয়া পথ ধরে এগিয়ে যেতে থাকে গন্তব্যে। জীবন চলতে থাকে বহমান সময়ের মত নিরবচ্ছিন্ন। সময়ের চাকায় জং ধরে। যৌবনের নদীতে ভাটা পড়তে পড়তে একসময় শুকিয়ে যায় সব জলধি। শরীরের মধ্যে কঠিন কঠিন রোগ বাসা বাঁধে মায়ের। ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার জানায় দুরারোগ্য রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। মুহূর্তেই এলোমেলো হয়ে যায় সন্তানের পৃথিবী। ‘মা’ ছাড়া এই পৃথিবী ভাবতে পারে না সে। ‘মা’কে ছাড়া জগৎ সংসার মিছে মনে হতে থাকে। সুহাম অনুভব করে বিশাল বিস্তীর্ণ এই পৃথিবীর কোথাও তার জন্য ‘মা’অপেক্ষা করে নেই। জীবনের পথে হেঁটে হেঁটে মা চলে গেছে অনন্ত পরপারে। জীবন হয়তবা এমনই। একসময় সবকিছুই হারিয়ে যায়, রেখে যায় স্মৃতির গগনে তোলপাড় করা কিছু সময়। গ্রামীন পটভূমিতে যৌথ পরিবারের একজন মধ্যবিত্ত মায়ের সুখ- দুঃখ, হাসি -কান্না, আনন্দ- বেদনা, সন্তানস্নেহ, মায়া- মমতা, আদর - ভালোবাসা, বৃদ্ধাবস্থায় উপেক্ষাসহ বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন মন কেমন করা ঘটনা নিয়ে উপন্যাস ‘মা’।
দক্ষিণ বাংলার সীমান্তে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের কোলে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার আটুলিয়া গ্রামে মোঃ সিরাজুল ইসলাম এফসিএ ১৯৭৬ সালের ২০শে আগষ্ট জন্মগ্রহন করেন। স্মৃৃতিময় দুরন্ত শৈশব ও বর্ণময় কৈশোর কেটেছে তার চাঁদের আলোয় রুপালি ঝিলিক তোলা ছোট্ট নদী চুনার তীরের নির্জন গ্রামে মনের আনন্দে খেলে, নদীতে সাঁতার কেটে, মাছ ধরে। কখনো বা চাঁদনি রাতে ধবধবে সাদা জোছনার বুকে একাকী বসে থেকে, যেখানে পূর্নিমা রাতে আকাশ ভেঙ্গে নামা শুভ্র জোছনার প্লাবনে ভেসে যায় পল্লীর মাঠ, ঘাঠ, অবারিত প্রান্তর। কখনো বা জোনাক জ্বলা আঁধার রাতে তারার অলোয় পথ চলে। তিনি ১৯৯২ সালে এস,এস.সি পাশ করার পরে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে হিসাব বিজ্ঞানে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রী লাভের পর ২০১১ সালে Chartered Accountant হিসাবে Qualified হন এবং ২০১৬ সালে FCA ডিগ্রী লাভ করেন। বর্তমানে পেশাদার Fellow Chartered Accountant(FCA) হিসাবে কর্মরত। পুরস্কার : অতীশ দীপঙ্কর গবেষণা পরিষদ কর্তৃক অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক-২০১৯ পদকে ভূষিত হন। মহাত্মা গান্ধী গবেষণা পরিষদ কর্তৃক মহাত্মা গান্ধী পিস অ্যাওয়ার্ড- ২০১৮ অর্জন করেন। ওমর সিরাজ জি কিউ ফাউন্ডেশন কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০১৮। রোহিঙ্গা জীবনের গল্প ‘‘সীমান্তের ওপারে” উপন্যাসের জন্য অমর সাহিত্য সন্মাননা- ২০১৮ লাভ করেন। এ কাদের ফাউন্ডেশন কর্তৃক“ শিশির ভেজা পথ” উপন্যাসের জন্য বিশেষ সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭ এবং সাউথ আটুলিয়া চ্যারিটি ফাউন্ডেশন কর্তৃক“ শিশির ভেজা পথ” উপন্যাসে এইড্স নিয়ে জনসচেতনতায় অবদান রাখার জন্য বিশেষ সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭ পদকে ভূষিত হন।