উপন্যাসটির পটভূমি এই শতাব্দীর প্রথম দশক। আত্মজীবনীর আদলে লেখা হলেও শেষ পর্যন্ত এটি উপন্যাস। ডালপালা বিস্তারের মাধ্যমে বিভিন্ন অবয়বে পলাশ উপন্যাসের পরিধি বর্ধন করেছেন; আর তা করতে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন কৌশলের। উপন্যাসের কাহিনি এগিয়েছে স্মৃতিচারণামূলক কথ্য রীতিতে। চল্লিশ বছর বয়সে শান্তিনিকেতনে বসে লেখক অতীতের কথা স্মরণ করেছেন। দিনপঞ্জির মতো লিপিবদ্ধ করেছেন পুরানো সেই দিনের কথা। পলাশ লেখেন নিজস্ব ভঙ্গিতে। তিনি পূর্বসূরিদের কাউকে অনুকরণ তো দূরের কথা, অনুসরণও করেন না । পলাশের স্বতন্ত্র রচনাশৈলী, শব্দচয়ন, বাক্যবিন্যাস, গদ্যের কাব্যময়তা, আঙ্গিকগত সৌন্দর্য, সাবলীল বর্ণনারীতি ও ছান্দসিক দোলা পাঠককে রীতিমতো ভাবায়। মনে জাগায় আনন্দ। পলাশ সমাজমনস্ক, রাজনীতির ধার ধারেন না। তবু তাঁর লেখায় সূক্ষ্মভাবে চলে আসে রাজনীতি। পর্যবেক্ষণশীল পাঠকের কাছে তা ধরা পড়ে অনায়াসে। নর-নারীর চিরাচরিত প্রেম পলাশের লেখার অন্যতম অনুষঙ্গ। পাশাপাশি সামাজিক অনাচার, পরকীয়া, ডিভোর্স, যৌনতা তিনি ফুটিয়ে তোলেন নিপুণ তুলিতে। বিশাল তার ক্যানভাস। কথাশিল্পী পলাশ দার্শনিক নন, তবে তার লেখায় দার্শনিকতা স্পষ্ট। আর পলাশের গদ্য ঝরঝরে ও প্রাণবন্ত।