আমরা জানি, আল্লাহপাক পৃথিবীতে যত মাখলুক সৃষ্টি করেছে তার সব কিছু একটি শৃঙ্খলা মেনে চলছে। প্রত্যেকটি সৃষ্টি তার নিজস্ব পরিচয় অনুসারে আচরণ করে । সুর্য আলো দেয় ,আগুন দাহ করে, পানি তৃষ্ণা নিবারন করে আবার কৃষক কৃষি কাজ করে, তাতি তাঁত বুনে, জেলে মাছ ধরে । সুর্য সকালে এক রকম, দুপুরে আরেক রকম ,বিকালে আর একরকম আলো দেয়। বাস্তবতা যে, প্রত্যেকটি জিনিস এককভাবে যেমন তার পরিচয় অনুসারে একটি নির্দিষ্ট আচরণ করে, তেমনি তার খণ্ডিত বিভিন্ন অংশও পৃথকভাবে তার নিজস্ব পরিচয় অনুসারে আচরণ করে। প্রত্যেকটি বিষয়ের পরিচয় নির্ভর করে সুশৃঙ্খল শ্রেণীবিন্যাসকরণের উপর। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে,সব কিছুর পেছনে সর্বজনীন যে সুত্র বা শৃঙ্খলা কাজ করছে, তা হল ‘সুশৃঙ্খলভাবে শ্রেণীবিন্যাসকরণ এবং পরিচয় অনুসারে আচরণ বা অনুশীলন করা’। বাস্তবে পৃথিবীর প্রত্যেকটি সমস্যা সমাধানের দুটি পথ আছে -একটি প্রাকৃতিক আরেকটি কৃত্রিম। যেমন জ্বর হলে আমরা নাপা বা প্যারাসিটামলের দ্বারা জ্বরের প্রকোপ বা তাপমাত্রা কমাতে পারি কিন্তু জ্বর ভাল করতে পারি না। কারণ এটা কৃত্রিম পদ্ধতি। প্রাকৃতিক পদ্ধতি সেটা যা জ্বরের মূল কারণ পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে অনুসন্ধান করে তার সমাধান করে। আসলে জ্বর কোন রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। হিসাববিজ্ঞানের প্রচলিত পদ্ধতি উপরোক্ত সর্বজনীন সুত্র বা তত্ত্ব অনূসরণ না করে গড়ে উঠেছে যে কারনে জ্বরের উপসর্গ দুর করার ন্যায় শুধুমাত্র পরীক্ষায় সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করে। কি, কেন, কোথা থেকে,কিভাবে-এ সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। কারণ প্রচলিত বইগুলো হতে প্রাকৃতিকভাবে হিসাববিজ্ঞানের সমস্যা সমাধান করতে নিম্নের তিনটি বাঁধা আছে (1) লেনদেন থেকে হিসাবখাত নির্ধারণে কোন পদ্ধতি বা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না থাকা। (2) ডেবিট ক্রেডিটের অস্পষ্ট ব্যাখ্যা। (3) হিসাববিজ্ঞান শিখতে কোন নির্দি ষ্ট পদ্ধতি না থাকা। এই বইতে প্রাকৃতিকভাবে হিসাববিজ্ঞানের সমস্ত প্রক্রিয়া সমাধানের জন্য উপরোক্ত সর্বজনীন তত্ত্বকে কেন্দ্র করে সুশৃঙ্খলভাবে শ্রেণীবিন্যাসকরণের জন্য সাধারণভাবে সংঘটিত ব্যবসায়ের সমস্ত লেনদেনগুলিকে উদ্দেশ্য অনুসারে ১৫ টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। তারপর উক্ত শ্রেণীবিভাগ বাস্তবতার নিরিখে ধারাবাহিকতার যৌক্তিকতা দাঁড় করানো হয়েছে। যাতে যে কোন লেনদেনের ক্ষেত্রে যেন সহজে উদ্দেশ্য বা পরিচয় নির্ধারণ করা যায়। তারপর লেনদেন বিশ্লেষণের তালিকা (পদ্ধতিভিত্তিক হিসাববিজ্ঞান শেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার)অনসরণের মাধ্যমে ভিত্তি হিসাব ও বিপরীত হিসাব নির্ধারণ এবং উহার প্রভাব বুঝে অনূসরণ করলে প্রাকৃতিকভাবে হিসাববিজ্ঞানের সমস্যা সমাধানের কাজ ৯৯পার্সেন্ট হয়ে যায়। বাকি ১ পার্সেন্ট এই বইয়ের ডেবিট ক্রেডিটের সুস্পষ্ট ধারণা, সাধারণ জাবেদার জন্য মডেল সাধারণ জাবেদা এবং সমন্বয়ের জন্য মডেল সমন্বয় জাবেদার মাধ্যমে প্রায় ১০০ পার্সেন্ট শেখা সম্ভব হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা আত্মনির্ভরশীলভাবে শিখে শ্রেণী পরীক্ষার পাশাপাশি , বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে জীবনের সর্বস্তরে হিসাববিজ্ঞানের সমস্যা সমাধান করে আকাংঙ্খিত অবস্থানে যেতে সহায়ক হয়।