" আরভিন আমার আঁচল ধরা ছেলে। জন্মের পরই যে আঁচলে মুখ ঢেকেছিল, সেই আড়াল থেকে মুখ বের করতে হয়নি। বাবা না থাকায় আমার একলা কোলে বড় হয়েছে। যত চাওয়া, বায়না, আবদার সব আমার কোলে বসেই করেছে। মা হিসেবে যতটুকু পেরেছি পূরণ করেছি। না পারলে বুঝিয়েছি। সে এক কথায় মেনে নিয়েছে। জেদ করেনি, অভিমান করেনি, অভিযোগ করেনি। সেই ছেলে একদিন এসে বলল, ' মা, আমি উদীতীকে চাই। দিবে? ' আমি বুঝাতে চাইলাম, উদীতীকে দেওয়া যাবে না। তোর জন্য তনিমাকে রেখেছি আমি। সে বুঝল না। প্রথমবারের মতো অভিমান করল। তারপর অভিযোগ। সবশেষে জেদ করে করল, ' যদি উদীতীকে না দেও, আর কখনও তোমার কাছে আসব না। বাবা, বড় ভাইয়ের মতো আমিও হারিয়ে যাব। ' আমি এত ভয় পেলাম! মনে হলো, আমি মরে যাচ্ছি। একমাত্র মৃত্যুই তো পারে, মানুষকে সকল সম্পর্ক থেকে ছিন্ন করতে। আমারও বুঝি তাই হচ্ছে। প্রথমে স্বামী, তারপরে বড় ছেলেকে হারিয়ে এই ছোট ছেলেটাকে আঁকড়ে ধরেই তো বেঁচে আছি। সেও যদি সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় তাহলে বেঁচে থেকেও আমি মারা যাব। এই মারা যাওয়ার ভয়ে আমি প্রতিশ্রুতি ভেঙে ফেলেছি। আমার ছেলের চাওয়াকে পূরণ করতে এতদূর এসেছি। মা, আমাকে মৃত্যুরোগ থেকে বাঁচিয়ে নিবে তো? আমি এত জলদি মরতে চাই না। নতুন সম্পর্ক জুড়তে চাই। তাদেরকে আদর করতে চাই, ভালোবাসতে চাই, যত্ন করতে চাই। একসঙ্গে হাসতে চাই। আফসানা বেগম পুনশ্চঃ ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দিয়ে গেলাম। মাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে, যোগাযোগ করো। আমি অপেক্ষায় থাকব।