ওটা হয়ে গেল। বুকটা উঠছে নামছে। নিশ্বাস পড়ছে ঝড়ের গতিতে। চোখ খুলতে পারছি না। স্পর্শ পাচ্ছি । এখনও প্রতিধ্বনি শুনছি। একটা পুরুষের ঘ্রাণ শরীরে এখনও লেপ্টে আছে। লোমকূপে এখনও তার উত্তেজনা রয়ে গেছে। আমাকেই আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। সত্যিই কি এটা আমি ছিলাম? কী অবিশ্বাস্য ব্যাপার-স্যাপার! এমন চৌর্যবৃত্তির স্বভাব আমার ভেতরেও রয়েছে? আসলে মানুষ বোঝে না, তার ভেতরে কত কী লুকিয়ে আছে। জানলে কী যে করে বসত, কে জানে! সবকিছু স্বাভাবিক বলেই ধরে নিতে চাই। মনের কুতুকুতু ভাবটাকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে হবে। সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংস্কারে ডোবা আমি। আমাকে আমি চিনতে পারছি না। যেন অন্য এক আমি। মাটির গভীর থেকে জল যেমন উদগত হয় ঠিক তেমন করে মনের ভেতর থেকে আনন্দবারি বলকে বলকে উঠছে। আমি তার গতিরোধ করতে পারি না। শরীরের ঘর্ষণ মন্দ লাগেনি। শরীরের লোমকূপ বেয়ে আনন্দধ্বনি নির্গত হয়েছে। তার রেশ এখনও শরীরে রয়ে গেছে। কি আমি জানি, যখন সব শান্ত হয়ে যাবে, তখন? তখন যা হবার হবে। আপাতত, আমি আনন্দে ভাসছি। সবকিছু নতুন মনে হ”ছে। জীবনটা সুন্দর মনে হয়েছে। আসলেই তো জীবন সুন্দর। ‘জীবন সুন্দর জনাবা’Ñকে যেন ফিসফিস করে বলছে। আমরা নিজেরাই নিজেদের ঘেরাটোপে বন্দি করে রাখি। কেউ থাকতে না চাইলে কারো সাধ্যি নেই তাকে জোর করে বন্দি করে রাখে। শিকলের বাঁধন থেকে নিজেকেই মুক্ত হতে হবে। না হয় একা একাই জ¦লতে হবে দুঃখের দহনে। ‘সুখ তুমি কী? বড় জানতে ইচ্ছে করে, আমার জানতে ইচ্ছে করে।’ ভালোবাসার পথ বেয়েই তো এই আনন্দ এসেছে। আমার জংধরা জীবনে এমন একটি ক্ষণ আসবে আমি কল্পনাই করিনি। সেটা যেভাবেই আসুক, এসেছে তো। আমি গুনগুন করে গান গাইব আজ। কে, কী মনে করবে? করুক। কারো কিছু মনে করা দিয়ে তো আমার জীবন চলবে না। আমার শাশুড়ি থাকলে চোখ বড় বড় করে তাকাত। তিনি বাসায় নেই। আহা, ভালো লাগছে, ভালো লাগছে আমার। আমার ভেতরে যখন এমন একটি নহর বয়ে যা”েছ, তখন তাকে চোখের কোণে দেখতে খুব ই”েছ হলো। রেহানের অস্তিত্ব ভুলেই গেছিলাম।