সময় যখন আসে স্বপ্নভঙ্গের, হতাশা ও প্রেম বিবর্জিত আলো যখন দুয়ারে কড়া নাড়ে তখন একমাত্র কবিই পারে দুঃস্বপ্নের বুকে লাথি মেরে স্বপ্ন জয়ের দুঃসাহস দেখাতে। কবির সূত্রপাত সৃষ্টি লগ্ন থেকেই । কষ্টের মহাসমুদ্র সেঁচে কবি তুলে আনেন আনন্দের মণি মুক্তা । কবিই পারে মা মাতৃভূমি ও মানুষকে নিবিড়ভাবে ভালোবাসা শেখাতে কবিতার মাধ্যমেই সকল হৃদয়ের বন্ধ দুয়ার উন্মুক্ত করার অসীম শক্তি নিয়েই যেন জন্মেছেন বর্তমান সময়ের প্রতিভাবান কবি রুহুল আমিন রোদ্দুর যিনি নিজেস্ব ক্ষমতায় শব্দকে শাসন করে মা, মাটি, দেশ ও সময়কে তুলে ধরেন লেখনীতে। সীমাহীন কল্পনা ও ভাবকে সম্পূর্ণ নিজের আয়ত্বে রেখে কবি নির্মাণ করেন কবিতার শরীর । কবি তাঁর নিজস্ব অনুভবের জগতে মহাপরাক্রমশালী, অসম্ভব রোমান্টিক কখনো কখনো আবার ভয়ানক রকম নিঃসঙ্গ। এই অপ্রতিরোধ্য নিঃসঙ্গতার বোধটি থেকেই কবি রচনা করেন কালজয়ী কবিতা, ফলে পাঠকের মননে তৈরি করে নিয়েছেন তাঁর একান্ত নিজস্ব যাত্রাপথ । মানুষ মাত্রই অভিমানী, এই অভিমানী মানুষগুলো নীরবে নিভৃতে শুকতারার মতো জ্বলে জ্বলে হয়ে খসে অনন্তের বুকে । জলবসন্তের ছোপ ছোপ দাগের মতোই তাদের অক্ষিকোটরে পড়ে থাকে নোনা জলের অগণিত পেয়ালা । “শ্রাবণ মেঘের অভিমান” কাব্যগ্রন্থটিতে কবি দেশ মাটি ও মানুষের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে থাকা নিবিড় প্রেম, বিরহ, দুঃখ, কষ্ট, বোধের এমন সব পঙক্তির জন্ম দিয়েছেন যা পাঠক হৃদয়ে জন্মদাগের মতোই স্থায়ী অবস্থান গড়ে তুলবে। জন্ম-রোমান্টিক কবি, কাব্যগ্রন্থটিতে- ধরণীর বুকে একমাত্র বৃক্ষ মানব হয়ে প্রতীক্ষায় থাকতে চেয়েছেন অনন্তের বুকে । সাবধানতার শৃঙ্খল ভেঙে প্রস্ফুটিত প্রেমের প্রথম আলোতে ফিরে যাবার আকুতি জানিয়েছেন। মহাকালের মহামারী দুঃসময়কে রুখে দেওয়ার দুঃসাহসিকতাও দেখিয়েছেন । আবার কখনো কখনো এক থালা ভাতের মধ্যে খুঁজতে চেয়েছেন ঈশ্বর। সাহিত্যের আকাশ পেরিয়ে মহাকালের বুক থেকে কবি যে অভিনব উপমা, সার্থক শব্দের সম্ভার এনে যেভাবে দার্শনিকতার পরিচয় ফুটিয়ে তুলেছেন তাতে পাঠক হৃদয় জয় করে সাহিত্যের উচ্চ অধিষ্ঠিত হবেন বলে নিঃসন্দেহে আশা করা যায়।
রুহুল আমিন রোদ্দুর জন্ম- ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৩, ঠাকুরগাঁও জেলা। আব্দুল মালেক ও মিসেস আসরেফা বেগমের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে রুহুল আমিন রোদ্দুর কনিষ্ঠ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি বি এ, এম বি এ সম্পূর্ণ করেন। লেখালেখির অভ্যাস ছিল স্কুল জীবন থেকেই, লিখেছেন বিভিন্ন সাহিত্য পাতায়। সাহিত্য জগতে কবি পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা ও পুরুস্কার। কৈশোর থেকেই অত্যান্ত ডান পিটে আর মেধাবী “রুহুল আমিন রোদ্দুর” লেখার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও রেখেছেন অসাধারণ সাফল্য, ঘরে তুলেছেন স্যার এফ এফ রহমান হল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তঃহল পুরুস্কার সহ বিভিন্ন পুরুস্কার। বলয়ের বাইরে তিনি একজন সমাজ সেবক। অনাহারী, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত হাজার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন সেচ্ছাসেবী সংগঠন “আলোর পথিক”। তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আছেন।