সময়টা অস্থির। তার নিজেরই কোনো গন্তব্য নেই। মানুষগুলোরও সেই দশা। তবে এদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করে তারা গন্তব্যটা জানে। তাই ছুটে চলে। আবার কেউ কেউ মনে করে তারা খুঁজে পেয়েছে অনেকদিন পর। তারাও ছুটে যায়। কিন্তু আদতে কিছু মানুষ হয় সমুদ্রের মতো। তাদের বুকে উত্তাল ঢেউ। সেই ঢেউ তাদের বুকে জমা ইচ্ছে, স্বপ্ন, মানুষদের ছিটকে ফেলে। কখনও সামুদ্রিক ঝড়ের মতো অস্থির তারা, আবার কখনও ঝড়ের পর শান্ত প্রকৃতির মতো স্নিগ্ধ। এই উপন্যাসের মূল চরিত্র বেলাও তেমন। কভিড-১৯ এই পৃথিবীতে নানা পরিবর্তন এনেছে। এর সবকিছু এখনও দৃশ্যমান না। কভিড যে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছে তাতে সন্দেহ নেই। আমাদের প্রতিদিনকার যাপিত জীবন থেকে শুরু করে বিশ্বাস, আদর্শকেও প্রভাবিত করেছে মহামারি। কেউ মানিয়ে নিতে পারছে, কেউ পারছে না। কভিডের আগের জীবন আর পরের জীবন সম্পূর্ণ আলাদা। সেই বদলে যাওয়া জীবন নিয়েই এ বইয়ের গল্প। সে গল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক নারীর জীবন। কিংবা তার জীবনের কথাই ‘বেলাভূমি’র মূল গল্প। এ কালের এক নারীর বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার প্রাথমিক পর্যায়ের গল্প বলে বেলাভূমি। তার জীবনের সঙ্গে মিশে থাকে সমাজের, সময়ের কিছু নিয়ম, আদর্শ, যাপিত জীবনের রীতি আর সেই রীতি ভাঙার ইচ্ছে। তাকে কখনো সাহায্য করে কভিড-পরবর্তী সময়। কখনো প্রশ্ন করে পুরোনো সম্পর্ক। আর নিয়মের নিগড়ে থেকে নিয়ম-ভাঙা সে নারী সমুদ্রের নোনাজলের মতো আছড়ে পড়ার জন্য খোঁজে এক টুকরো আশ্রয়।
জন্ম ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে, কীর্তনখোলা নদীর তীরে, বরিশাল শহরে। নদীর অন্য পাড়ে দিনার গ্রামে পিতৃপুরুষের ভিটা। সেখানেই শৈশবের কিছু অংশ কেটেছিল। অতঃপর ছয় বছর বয়সে পিতামাতার হাত ধরে রাজধানীতে আগমন। শিক্ষাজীবন শুরু মায়ের কাছে। এরপর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে, স্কুল জীবনের দশ বছর কাটিয়ে বর্তমানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’-এ অধ্যয়নরত। লেখালেখির সূচনা ভালোলাগা থেকে। ইচ্ছে ছিল দু’ একটা গল্প লেখার। লিখতে লিখতে একটা উপন্যাসও হয়ত কখনও দাঁড়িয়ে যাবে, এ আশাও ছিল। কিন্তু কেমন করে যেন গল্প থেকে ইতিহাসের পথে চলা শুরু। হয়ত ইতিহাসের ভেতরে অনেক গল্প থাকে বলেই এ যাত্রায় এতো আগ্রহ। ইতিহাস থেকে এখন ছোটগল্প, উপন্যাস, সমালোচনা; লেখালেখি চলছেন। লিখেছেন বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে, জাতীয় দৈনিকে। সবকিছু সঙ্গে করে অনেকদিন লিখে যাওয়ার ইচ্ছা।