১৮৬৮ : ১৬ মার্চ নিঞ্জি রাশিয়ার ভোলগা নদীর তীরে অবস্থিত নভোগরদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন আলেক্সিয়েই ম্যাক্সিমভিচ পেশকভ। (তারিখটি বর্তমান পঞ্জিকার হিসেবে দাড়াবে ২৮ মার্চ। কারণ সেকালে রুশ দেশে ব্যবহৃত জুলিয়ান পঞ্জিকা বর্তমানে বিশ^ব্যাপী খ্রিস্টাব্দ গণনার গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা থেকে ১২ দিন পিছিয়ে ছিল।) পারিবারিকভাবে তাঁর নাম পেশকভ রাখা হলেও তিনি পরবর্তীতে গোর্কি নামেই বিশ^ব্যাপী পরিচিত হয়েছিলেন। গোর্কি নামটা তার নিজের দেয়া ছিল। রুশ ভাষায় যার অর্থ ছিল তেঁতো। বাবা ম্যাক্সিমসাভভাতেভিচ পেশকভ ছিলেন আস্তাখান শহরের স্টিমশিপ কারখানার জুতারমিস্ত্রি। মা ভর্ভারা ভাসিলিয়েভনা পেশকভা। (কুমারী অবস্থায় পদবি কাশিরিনা।) ১৮৭১ : গোর্কির বাবা ম্যাক্সিমসাভভাতেভিচ পেশকভ ওলাওঠা রোগে মারা যান। ১৮৭৬ :গোর্কির মা মারা যাওয়ার পর তার নানা তাকে জানিয়ে দেয় যে, তারা আর দায়িত্ব নিতে পারবেন না। আর তাই মাত্র ৮ বছর বয়সেই গোর্কি জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি জুতার দোকানে সহকারী হিসেবে যোগ দেন। ১৮৭৯ : গোর্কি তাঁর মা ভর্ভারা ভাসিলিয়েভনা পেশকভা কে হারান। ১৮৮০ : বাবা-মা মারা যাওয়ার পর গোর্কিকে শ্রমিকের কাজে নামতে হয়েছিল। হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে এই সময় তিনি ঘর ছাড়েন। ১২ বছর বয়সে দাদিকে খুঁজতে গৃহত্যাগ করেন। ১৮৮৪ : কাজের সূত্রে তিনি কাজান শহরে আসেন। এই শহরেই তিনি জীবনে প্রথম এমন কিছু মানুষের সঙ্গ লাভ করেন, যারা তাঁর লেখাপড়ার জন্য কিছুটা আনুকূল্য দান করেছিলেন। এই শহরে তিনি চার বছর অবস্থান করেন। এই সময়টাতেই তিনি পাঠ করার সুযোগ পান, রুশ ধ্রুপদী লেখকদের রচনা। এই সময়েই তিনি মার্ক্স ও অ্যাঙ্গেলস এর রচনার সাথে পরিচিত হন। তাদের যৌথ ইশতেহার ‘কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো’ পাঠ করার সুযোগও গোর্কি প্রথম পেয়েছিলেন এই সময়ে। ১৮৮৭ :১৪ ডিসেম্বর বিশ বছর বয়সে নদীর তীরে গিয়ে নিজের বুকে গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন গোর্কি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসকরা তার জীবনের আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি। ১৮৮৮ : ১৮৮৮-১৮৯২ সাল পর্যন্ত গোর্কি ঘুরে বেড়ান রাশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এই ভ্রমণের ফলে ভলগা ও দন নদীর অববাহিকা জুড়ে বিশাল এলাকার মানুষজন, সমাজ, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, আচরণ ও অভ্যাস সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। ১৮৯০ : কাজান থেকে গোর্কি রুশ দেশের নানা জায়গায় ঘুরতে ঘুরতে কখনো চাকরি নিয়ে, কখনো বেকার হয়ে জন্মস্থান নিজনিতে ফিরে আসেন। ১৮৯২ : ১২ সেপ্টেম্বর জর্ডিযার রাজধানী তিবলিস থেকে প্রকাশিত ‘কাফকাজ’ নামের একটি দৈনিক সংবাদপত্রে ছাপা হয় মাকার চুন্দ্রা নামে একটি গল্প। আসল নাম আড়াল করে তিনি আবির্ভূত হলেন ম্যাক্সিম গোর্কি নামে। এই দিনটিকে গোর্কি তাঁর সাহিত্যযাত্রার সূচনা বিন্দুরুপে গণ্য করতেন। ১৮৯৬ : গোর্কির রচিত ‘চেলকাশ’ গল্পটি ছিল রুশসাহিত্য তথা বিশ^সাহিত্যে এক অসাধারণ সংযোজন। আগস্ট মাসে একাতেরিনা পাভলভনা ভোলকিনার সঙ্গে গোর্কির বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই বিবাহ ১৯০৪ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল। আইনগত তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ না ঘটলেও একত্রে জীবনযাপন আর করেন নি।
(মার্চ ২৮, ১৮৬৮ – জুন ১৮, ১৯৩৬) বিখ্যাত রুশ সাহিত্যক। তিনি নিজেই তার সাহিত্যক ছদ্মনাম হেসেবে বেছে নেন 'গোর্কি' অর্থাৎ 'তেতো' নামকে। তার অনেক বিখ্যাত রচনার মধ্যে মা একটি কালজয়ী উপন্যাস। প্রথম জীবন মাক্সিম গোর্কি নিঞ্জি নভগরদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৯ বছর বয়সে পিতৃমাতৃহীন হন। ১৮৮০ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি তার দাদীমাকে খুঁজতে গৃহ ত্যাগ করেন। ১৮৮৭ সালে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পায়ে হেঁটে সমগ্র রাশিয়া ভ্রমন করেন। তিনি ১৮ জুন ১৯৩৬ (৬৮ বছর) সালে মৃত্যু বরণ করেন।