“ইতিহাস-ঐতিহ্য-প্রাচীনত্ব ও গৌরবময় শহর ঢাকা” শতাব্দী প্রাচীন এই জনপদ যুগে যুগে কালের বিবর্তনের ধারাকে বুকে ধরে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে আছে। ঢাকা আজ স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের রাজধানী। আজকের এই গৌরবময় মনজিলে পৌছতে এই জনপদকে বহুবার পরিণত হতে হয়েছে রণাঙ্গনে। বীর নগরবাসীর আত্মত্যাগ ও বীরত্বের যশোগাথায় সমুজ্জল আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। বুড়িগঙ্গার পানি অনেক গড়িয়েছে মহাকালের স্রোত ধারায়। ঢাকা এখন এই ভূখণ্ডের কোটি মানুষের আশা আকাঙ্খা ও প্রাপ্তির প্রতীক। কেবলমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নয়, সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ঢাকা এখন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। জাতিসংঘ এই ঢাকা নগরীকে শান্তির শহর বলে ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে। যুগের ও সময়ের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে আমরা দলমত নির্বিশেষ ঢাকাকে সত্যিকারভাবে একটি আধুনিক, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন, দূষণমুক্ত পরিবেশ এবং সত্যিকারের শান্তির নগরীতে পরিণত করতে প্রয়াসী হয়েছি। আমাদের এই কর্মপ্রয়াসে অতীতকে অবশ্যই পর্যালোচনা করতে হবে। অতীত ইতিহাসের সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে আমাদের লুপ্ত গৌরব পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে ঢাকাবাসীকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের হারিয়ে যাওয়া অতীতের সাথে যোগসূত্র স্থাপনের যে মহৎ প্রচেষ্টা জনাব নাজির হোসেনের গ্রন্থে স্থান পেয়েছে, তা তাঁর বহু শ্রম ও নিষ্ঠালব্ধের ফসল এই কিংবদন্তির ঢাকা। বিস্মৃতির গহবরে হারিয়ে যাওয়া অতীতের অনেক কিছু আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বংশদরদের সামনে জীবন্ত করে রাখার এই মহতী প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাই। ঢাকা একটি সু-প্রাচীন নগরী। এই ঢাকা, ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চল- বিশেষ করে ঢাকার রাস্তাঘাট ও গলিপথের নামকরণের পিছনে কী ইতিহাস রয়েছে সে সব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে লেখক অতীতকে জীবন্ত করে তুলেছেন। পাঠক-পাঠিকাকে পূর্ব পুরুষদের স্মৃতি মুখরিত পথঘাট সফরের আনন্দে ধন্য করেছেন। কিš‧ কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়তো কারো দ্বিমত থাকতে পারে। আমারও থাকতে পারে এটা স্বাভাবিক। তবু কালের পরিক্রমায় ঢাকার রাস্তাঘাটের নাম বিকাশের ইতিহাস সত্যই চিত্তাকর্ষক হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে “কিংবদন্তির ঢাকা” গ্রন্থখানির যে কী মূল্যবান অবদান থাকবে তা কেবল ভবিষ্যতই নির্ধারণ করবে। ইতিহাস ও কিংবদন্তির সংমিশ্রণে রচিত এই সুচিন্তিত মূল্যবান বইখানির আমি বহুল প্রচার কামনা করছি। আল্লাহ হাফেজ। মোহাম্মদ হানিফ (তৎকালীন মেয়র, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন)