মহানবীর সা. জীবনীর প্রথম ভিত্তি আল্লাহর বাণী আল কুরআন। যে সত্তা তাঁকে রাসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন, তারই জবানীতে বিবৃত হয়েছে নবীজীর জীবনী। যার উপর সবিস্তার আলোকপাত করা হয়েছে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম খণ্ডে। মহানবীর সা. জীবনীর দ্বিতীয় উত্স সুন্নাহ ও হাদীস । নবীজীর জবানীতে কিংবা তাঁর স্বজন-সাহাবাদের জবানীতে বিবৃত হয়েছে নবীজীবনী। এর মূল্য , গুরুত্ব ও প্রামাণ্যতা সুপ্রতিষ্ঠিত। হাদীসের আয়নায় নবীজীবনের চিত্রায়নে এক অনন্য ও প্রামাণ্য সৃষ্টিকর্ম - রাসুলুল্লাহ (সা.) দ্বিতীয় খণ্ড! সীরাতের প্রতিটি দিক ও দিগন্তকে অবলম্বন করে হাদীস সংকলনের দিক থেকে এ গ্রন্থ একটি অসাধারণ কাজ। কারণ ফিকহ বা অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক হাদীসের সংকলন প্রচুর পরিমাণে থাকলেও শুধু সীরাতের ধারাবাহিকতাকে অবলম্বন করে হাদীস সংকলনের ধারা সেভাবে গড়ে উঠেনি। আরবি ভাষায় সীমিত পরিসরে কিছু বই চোখে পড়লেও বাছবিচারহীনভাবে হাদীস জড়ো করা হয়েছে এবং আকারের বিচারেও তা ক্ষুদ্র। সীরাতের অনেক প্রধান দিকও তাতে অনালোচিত থেকে গেছে। সীরাত বিশেষজ্ঞ মাওলানা মুসা আল হাফিজের এই গ্রন্থ মূলত প্রামাণ্য সনদের সহীহ হাদীস সমূহের সমাহার। যা সীরাতের গোটা পরিক্রমাকে একে একে উপস্থাপন করে ওহীর মর্মলোকে। বাংলা ভাষায় এমন এক মৌলিক কাজ বিরল ও গৌরবজনক। হাদীসের প্রামাণ্যতা আর সীরাতের সাথে এর নিবিড় একান্ততা ও একাত্মতাকে দালিলিক দৃঢ়তায় উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে গ্রন্থটি সীরাতকে প্রদর্শন করে এমন এক সমগ্রতা ও উচ্চতায়, যে সমগ্রতা ও উচ্চতায় অধিষ্ঠিত নেই আর কোনো মানুষের আর কোনো জীবনী! এই ভূপৃষ্ঠে, আকাশতলে এমন জীবন কেবল একটাই, এমন জীবনী কেবল একজনেরই। ওহীর ভাষায় ; কুরআনে- হাদীসে যার জীবন স্পষ্ট , স্বচ্ছ ও বিস্তারিতভাবে বিবৃত , সেই জীবনকে হাদীসের আয়নায় প্রদর্শনের পথে রাসুলুল্লাহ (সা.) দ্বিতীয় খণ্ড একটি কালজয়ী গ্রন্থ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস!
কবি, গবেষক ও আলেম মুসা আল হাফিজ। ১৯৮৪ সালের ৫ অক্টোবর সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের মাখর-গাঁও গ্রামে তাঁর জন্ম। ১৯৯৫ সালে, ১১ বছর বয়সে কুরআন মজিদের হিফজ সম্পন্ন করেন। ২০০৭ সালে কৃতীত্বের সাথে তাকমিল ফিল হাদীস (মাস্টার্স সমমান) সম্পন্ন করেন। জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ তরুণ আলেম প্রতিভা-২০০৮ এ সম্মানীত হন। ২০০৯ সালে কর্মজীবনের শুরু ঐতিহ্যবাহী বিশ্বনাথ জামেয়া মাদানিয়ায় শিক্ষকতা এবং মাসিক আল ফারুকের উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে। ২০১৬ সালে উচ্চতর ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামেয়াতুল খায়র আল ইসলামীয়া সিলেটে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৯ সালে ঢাকায়, যাত্রাবাড়ীতে প্রতিষ্ঠা করেন ইসলামী দা‘ওয়াহ ও গবেষণা কেন্দ্র মা‘হাদুল ফিকরি ওয়াদদিরাসাতিল ইসলামিয়া। বর্তমানে ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করছেন। ২০১১ সালে হয় তার কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয় কবি-সমালোচক মুকুল চৌধুরীর সনাক্তধর্মী আলোচনা ‘মুসা আল হাফিজ: কবিতার নতুন কণ্ঠস্বর’। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. রিজাউল ইসলাম তার সাহিত্যকর্ম নিয়ে লিখেন গবেষণাগ্রন্থ- মুসা আল হাফিজের মননবিশ্ব (২০১৮)। তরুণ কবি এম আসাদ চৌধুরীর সম্পাদনায় ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় তার সাহিত্যকর্ম নিয়ে বিশজন আলোচকের পর্যালোচনাগ্রন্থ ‘মননের কবি, বৈদগ্ধের দৃষ্টিতে’। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ৫০টির অধিক বই লিখেছেন।