গীতি কবিতার মধ্য দিয়ে লিখিত কবিতার জন্ম হয়েছিল। প্রতিটি জন্মের কোন না কোন দায় থাকে। লিখিত কবিতাও সেই দায় নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে। রাজনীতির নীতিকথার আড়ালে যখন নেকড়ের আচড় থাকে, মানুষ শব্দটি যখন মুখোশ বহন ও বপন করে, সংস্কৃতি যখন অপসংস্কৃতির পায়ের নিচে বসে তখন লিখিত কবিতা কথা বলে। লিখিত কবিতা কথা বলে আলোর পক্ষে, ভালোর পক্ষে। অবশ্য সব কবিতাই যে, শোষকের বিরুদ্ধে কথা বলে, নিপীড়িত মানুষের হাত ও ঠোঁট হতে পারে তা কিন্তু নয়। কেননা স্রষ্টা নিজেই যখন সুবিধাবাদী হয় তখন তার সৃষ্টিও সেই পথেই হাঁটে। এদিক দিয়ে কবি শাহীন ওমর ব্যতিক্রম। তাঁর কবিতায় অপরাজনীতির বিরুদ্ধে রয়েছে স্লোগান, অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে রয়েছে ধিক্কার, রয়েছে মানুষে পক্ষে, প্রকৃতির পক্ষে পূর্ণ ভালোবাসা, স্নেহমায়া, আদর ও সহানুভূতি। তিনি কতোটা মানবিক স্রষ্টা, তা তাঁর কবিতাই বলেÑ ‘পৃথিবীর কারাগারে কাঁটাতার দিলাম। আরও শৃংখলিত হলাম। শয়তান রাজ সিংহাসনে উপবিষ্ট হলে আমরা নাগরিক হলাম এং নগরেই থেকে গেলাম। আমাজনের বিলুপ্ত জীবন কাহিনীর ফসিলে ওঠে আসে আমাদের নৃতাত্ত্বিক ইতিহাস।’ কবি শাহীন ওমরের ‘স্বপনে শরাব ঢালে হুর’ কাব্যগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি পড়ে আমি তৃপ্ত। আমার বিশ্বাস তিনি কবিতার দীর্ঘ পথের ক্লান্তিহীন এক অভিযাত্রী। কবিতার পথ তাঁকে আপন করে নেবে এটা যেমন সত্য, তেমনি কবিতার প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে এটাও মনে রাখা তাঁর জরুরি।