জীবন যে পথে হেঁটে যায় সে পথেই লিখে চলে তার সুখ দুঃখ, মান অভিমান, বিষাদ কথা ও বাঁচার অন্যান্য ইতিহাস। তরুণ কবি ফুয়াাদ স্বনম মূলত মানুষের এইসব অনুভূতি এবং বাঁচার জীবন থেকেই সযতেœ কুড়োতে চেয়েছেন তাঁর অনুকবিতার উপাদান, যা “বেদনার শিরোনাম” এই গ্রন্থটিকে সমৃদ্ধ করেছে। এই গ্রন্থের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় রয়েছে প্রেম। যে প্রেম সুখ দুঃখ, মান অভিমান ও বিষাদের সাথে কখনও মিতালি করেছে আবার কখনওবা বিদ্রোহ করে এগিয়ে গেছে একা একা বহুদূরে। ফুয়াদ লিখছেন, “পোকাটির পাখা পুড়েছিল আগুনের কাছে এসে/ অবুঝ পোকা দোষ করেছিল আলোকে ভালোবেসে।” “তুমি ছেড়ে গেছো এ নিয়ে আক্ষেপ নেই কোনও/ জানি হৃদয়ে আজও আমারই প্রতিধ্বনি শোনো।” “ঠোঁট বলেছে ফিরে যেতে, চোখে ছিল জল ও কাজল কালির স্লোগান/ আসলে তো ফিরিয়ে দেয়া নয়, সবটুকু ছিল আঁকড়ে ধরার অভিমান।” যা বুকের ভিতরে ভালোবাসা বোধ নিয়ে ঝড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। “বেদনার শিরোনাম” অনুকবিতা সংকলন সংখ্যা হিসেবে কবির দ্বিতীয় গ্রন্থ হলেও এই গ্রন্থ বেশ আশা জাগানিয়া। তাই তাঁর কাছে এই প্রত্যাশা রইলো, আগামী দিনে এই গ্রন্থের সংখ্যা আরও বাড়–ক। কবির আগামীর যাত্রাপথ আরও আলোকোজ্জ্বল হোক আরও বিস্তৃত হোক এই আশা ও শুভকামনা রাখি। -রুদ্র গোস্বামী। ১৪/০১/২০২৩
পদ্মাপাড়ের এই দামাল ছেলের নাম মােঃ ফুয়াদ সাকী, কিন্তু ফুয়াদ স্বনম নামেই সে সর্বাধিক পরিচিত। এক সময় উন্মত্ত পদ্মার ঢেউয়ে চেপে ঝপাঝাপি আর দাপাদাপিতে শৈশব ও কৈশাের কাটানাে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে অবস্থানকারী এই লেখক, ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর, বাণিজ্যে মাস্টার্স কমপ্লিট করেন এবং চাকুরিজীবনের ইতি টেনে। বর্তমানে নিজ ব্যবসায় লিপ্ত আছেন এবং ব্যাপক। সুনাম অর্জন করে। ফুয়াদ স্বনমের জন্মস্থান চির সবুজের শহর ও শিক্ষা নগরী নামে প্রসিদ্ধ রাজশাহীতে। তার বাবা মা অতি অমায়িক এবং ভালাে মানুষ হিসেবে তাদের এলাকায় সুপরিচিত। চমকার বিনয়ী ও উজ্জ্বল দীপ্ত বুদ্ধিসম্পন্ন এবং চঞ্চল প্রকৃতির বলে পরিবার, শিক্ষক ও বন্ধুমহলে ব্যাপক স্বনামধন্য ও স্নেহের অধিকারী ছিলেন ছােট বেলা থেকেই। তবে এ সমাজের নানা অসঙ্গতি, হানাহানি, মানুষে মানুষে বিদ্বেষ, অহংকার, স্বৈরাচারী শাসন প্রভৃতি তার লেখক সত্তার মাঝে এক ক্ষুব্ধতা ও প্রতিবাদ সৃষ্টি করে, যা তার লেখনীতে প্রতীয়মান বরাবরই।। যা পরিলক্ষিত হয় তার লেখা ‘আমি নিম্ন-মধ্যবিত্ত বলছি’, ‘অধিগ্রহণ’, ‘বেকার’, ‘ছেলে হলে কাঁদতে নেই’ প্রমুখ কবিতায়। অপরদিকে প্রেম ও বিরহের কবিতাতেও দেখিয়ে চলেছেন তিনি সমান দক্ষতা। বইয়ের পাতায় নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়েই বসবাস করতেই যিনি বেশি আগ্রহী সব সময়। ৪ঠা জানুয়ারি ২০২১ এ তার বাবা পরলােকগমন করলে বর্তমানে ব্যক্তিগত জীবনে মমতাময়ী মা, স্নেহধন্য ভাই ও তার পরিবার, প্রিয়তমা স্ত্রী সাফিকা জহুরা এবং দুই সন্তান নিয়ে তার সুখের জীবন।