এই কাহিনি কোনো এক পৃথিবীর কোনো এক দেশের অন্ধকার, নিষ্প্রদীপ সময়ের করতলে বন্দি মানুষদের। ভয়ের সংস্কৃতি জ¦লজ¦ল করছে সেখানে। ব্যক্তি এই পরিস্থিতিতে কতটা অসহায়, নিঃসঙ্গ ও কাতর হয়ে উঠতে পারে সেটিই বলেছেন ইমতিয়ার শামীম এই গল্পে। অন্ধপ্রদীপ শূন্য-পানে নভেলায় আমরা মুখোমুখি হই এমন এক সময়ের—যা আমাদের হয়তো চেনা, হয়তো অচেনা, হয়তো-বা চেনার পরও না-চেনার ভানে ভরা। সে রকমই সময়ের একটি দিন। এক স্থপতি হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেলেন। একই দিন আগুন লাগল এক ভবনে, যেখানে তার অফিস ছিল। তাকে শনাক্ত করার জন্যে ডিএনএ টেস্ট হলো। তাতে সৃষ্টি হলো আরেক ধূম্রজাল। কেননা বাবা-মায়ের সঙ্গে ভদ্রলোকের ডিএনএ মিললেও মিলল না বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া কন্যার সঙ্গে! ভয়ঙ্কর এক সময় নেমে এলো সেই মেয়ে আর তার মায়ের সাদামাটা জীবনে। বাসা থেকে উচ্ছেদ হতে হলো। স্থপতির স্ত্রীকে চাকরি থেকে যেতে হলো বাধ্যতামূলক ছুটিতে। তাতেও রেহাই নেই—কালো কাচ-ঘেরা মাইক্রোতে কারা যেন তাকে তুলে নিয়ে ঘুরপাক খেল সারাদিন। পরিসর ছোট, কিন্তু এর অন্তর্লীন বিচ্ছুরণ ভীষণ গভীর নিতল। ভয়াবহ, রক্ত হিম করা এ গল্প যেন এই বিশ্বের কর্তৃত্ববাদে ঘেরা প্রতিটি দেশের। তাই বলে নেওয়া ভালো, এই গল্পের প্রতিটি চরিত্র ও ঘটনাই কাল্পনিক; কোনো দেশের কোনো মানুষের বা বাস্তব কোনো ঘটনার সঙ্গে যদি এর মিল খুঁজে পাওয়া যায়, সেটা নিতান্তই কাকতালীয়।
জন্ম : ১৩৭১ বঙ্গাব্দ, ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দ ; সিরাজগঞ্জের সলপ জনপদের রামগাঁতী গ্রামে। মা : হামিদা সুলতানা। বাবা : চৌধুরী ওসমান। পেশা : সাংবাদিকতা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা : এমএসএস [সমাজ বিজ্ঞান]; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ : ডানাকাটা হিমের ভেতর (উপন্যাস, ১৯৯৬)। অন্যান্য উপন্যাস : আমরা হেঁটেছি যারা, চরসংবেগ, অন্ধ মেয়েটি জ্যোৎস্না দেখার পর, মোল্লাপ্রজাতন্ত্রী পবনকুটির, তা হলে বৃষ্টিদিন তা হলে ১৪ জুলাই, আমাদের চিঠিযুগ কুউউ ঝিকঝিক, মৃত্যুগন্ধী বিকেলে সুশীল সঙ্গীতানুষ্ঠান, নীল কৃষ্ণচূড়ার জন্মদিনে, শাদা আগুনের চিতা, অন্তর্গত কুয়াশায়, যারা স্বপ্ন দেখেছিল। স্বীকৃতি : ‘মৃত্যুগন্ধী বিকেলে সুশীল সংগীতানুষ্ঠান’ গ্রন্থের জন্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কথাসাহিত্য পুরস্কার (২০১২), লোক সাহিত্য পুরস্কার (২০১৩), জীবনানন্দ সাহিত্য পুরস্কার (২০১৪), ‘শীতের জ্যোৎস্নাজাবলা বৃষ্টিরাতে’ গ্রন্থের জন্যে প্রথম আলো বর্ষসেরা সৃজনশীল গ্রন্থ পুরস্কার (১৪২১), কিশোর উপন্যাস ‘পাতার বাঁশি বাজে’র জন্যে শিশু একাডেমি পুরস্কার (১৪২১) এবং কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (২০২০)।