অপার অনস্ত রহস্য বিরাজ করছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে। যে রহস্যের আবরণ সম্পূর্ণ উন্মোচন করা যাবে না হয়তো কোনও দিনই। তবু আমাদের সভ্যতা যুগ যুগ ধরে সেই রহস্য ভেদ করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে তার মেধা আর মনন দিয়ে। জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শন, প্রযুক্তি দিয়ে বুঝতে চেয়েছে সীমাহীন রহস্যের প্রকৃতি। যতটুকু জানতে পেরেছে, বলা বাহুল্য, তা আমাদের পৌঁছে দিয়েছে বিস্ময়ের চরম সীমায়। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কথা থাকুক, এই পাঁচ হাজার বছরের সভ্যতার প্রধান কান্ডারি মানুষ নিজেও কি কম রহস্যময়। প্রতিটি মানুষের জীবন ও মনের গভীরে যে রহস্য লুকিয়ে রয়েছে, তাও কি আমাদের বিস্ময়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয় না? সত্যি কথা বলতে কী, প্রত্যেকের মনের গভীরে প্রতিনিয়ত যে আলো ও অন্ধকারের খেলা চলে, তার পরিষ্কার ব্যাখ্যা আজও নিশ্চিতভাবে দিতে পারেননি। কোনও মনস্তত্ত্ববিদ বা দর্শনিকও। আবেগ, ঈর্ষা, হিংস্রতা, স্বার্থপরতা, দয়া, মায়া, প্রেম, যৌনতা, সম্পর্ক, সংগ্রাম, সাফল্য, ব্যর্থতা প্রভৃতি প্রত্যেক মানুষের জীবনকে করে তোলে একেবারে ব্যতিক্রমী। সে দিক থেকে বলা যায়, প্রতিটি মানুষ নিজেই যেন এক-একটি বিশাল উপন্যাস। উপমন্যু রায়ের লেখা 'তার পর বৃষ্টির শব্দ' বইটির পাঁচটি উপন্যাসে মানুষের জীবনের সেই রহস্যময় দিকগুলি যেন জীবন্ত হয়ে হাজির হয় পাঠকের সামনে। এই উপন্যাসগুলি হল তার পর বৃষ্টির শব্দ, স্বপ্ন শূন্যতা এবং, অন্ধকার আরও, রিরংসা এবং আমার হাত ধরে তুমি নিয়ে চলো সখা। ব্যক্তি-মানুষের সেই রহস্যময় কাহিনিগুলি আলাদা ভাবে ধরা দিয়েছে এই পাঁচটি উপন্যাসে, যা পাঠককে ভাবাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।