এই বইয়ের অন্তর্গত অধিকাংশ প্রবন্ধ করোনা মহামারির সময়ে লিখিত। কিন্তু প্রবন্ধগুলোতে যে সকল বিষয় আলোচিত হয়েছে, তার প্রাসঙ্গিকতা ফুরায়নি। ফুরালে এই বইটি প্রকাশের কোনো প্রয়োজন পড়ত না। মহামারির আগে-পরে বাংলাদেশে আমরা এমন এক রাষ্ট্র ও শাসনপ্রণালীর মুখোমুখি হয়েছি, যে রাষ্ট্র তার জনগণের বিরুদ্ধে যেন প্রবল আক্রোশে এক যুদ্ধ জারি করেছে। এই যুদ্ধের বাস্তবতা উৎপাদন এবং একে জিইয়ে রাখা হচ্ছে দুই তরিকায়: একদিকে, নজিরবিহীন বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পদ্ধতিগত সিদ্ধান্তহীনতার মাধ্যমে জনগণের একটা বড় অংশের জীবনকে ক্রমশ হুমকির মুখে ফেলে দেয়া; অন্যদিকে যারা এমনতর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন এবং ভুলত্রæটি ধরিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন আইনি মারপ্যাঁচের মাধ্যমে তাদের নাগরিক অধিকার হরণ। কাজেই বাকস্বাধীনতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ক্রসফায়ার, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা, নাগরিক আন্দোলন, গণতন্ত্রের হালচাল ইত্যাদি যে এই বইয়ের উপজীব্য বিষয় হয়েছে এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। সা¤প্রতিক বাংলাদেশে সংঘটিত নানা ঘটনাকে ধরে মূলত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রকে উন্মোচন করার চেষ্টা করা হয়েছে। শ্বাস নেওয়ার মতো অমোঘ জৈবিক ব্যাপারও যেখানে রাজনৈতিক লড়াইয়ের অন্যতম কেন্দ্রীয় ডিসকোর্সে পরিণত হয় এই বই যেন সেই সন্ধিক্ষণেরই সাক্ষ্য দিতে হাজির হয়েছে...
সহুল আহমদ, জন্ম ১৯৯১ সালে, সিলেটে। পড়াশােনা করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। গবেষণা ও লেখালেখির সাথে জড়িত রয়েছেন। পূর্বে প্রকাশিত বই: মুক্তিযুদ্ধে ধর্মের অপব্যবহার, সময়ের ব্যবচ্ছেদ (সহ লেখক সারােয়ার তুষার) এবং জহির রায়হান: মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনৈতিক ভাবনা।