ছোটদের জন্য পদ্য ছড়া লিখতে বসে মনে হলো পারব কি? আমাদের ছোটবেলার সঙ্গে এখনকার শিশু-কিশোরদের ছোটবেলার তফাত হয়ে গেছে। আমাদের চারপাশে দাদু, ঠাকুমা, পিসি, মাসি যেসব আপনজন ঘিরে থাকতেন, তাঁদের মুখে গল্প, পদ্য, ছড়া শুনতে শুনতেই বড় হয়েছি। আজকাল ছোটদের মাঝে বইয়ের প্রতি আগ্রহ উসকে দেওয়ার জন্য গল্পবলা দাদু, ঠাকুমা আছেন কি? ছোটরা এখন কম্পিউটার, মোবাইলে গল্প, পদ্য ছড়া পড়ে একা একা। ভার্চুয়াল দুনিয়া ছেড়ে আমার লেখা বই তারা হাতে তুলে নেবে তো? করোনার জেরে গৃহবন্দি ছিলাম অনেক দিন। সেই সময় পদ্য ছড়া লিখতে কলম ধরি। অসমবয়সি বন্ধু রামপ্রসাদ সেগুলো ছাপাতে আমায় উৎসাহিত করে। তারই আগ্রহে নানা বিষয়ে প্রতিদিন একটি করে লেখা তার জিম্মায় দিয়ে দিতে পারলেই আমার কাজ শেষ। রামপ্রসাদ তার বন্ধু নীহার চক্রবর্তীর কাছে নিয়ে গিয়ে সেসব লেখা ছবিসহ ফেসবুকে প্রকাশের ব্যবস্থা করে। নীহারের চিত্রশিল্পী স্ত্রী মৌসুমী আর রামপ্রসাদের স্ত্রী কাজলরেখা হাত লাগায় অলংকরণ ও ফেসবুকে প্রকাশের কাজে। এমনি করে বেশ কিছু পদ্য ছড়া লেখা হলে লন্ডন থেকে বন্ধু অধ্যাপক গবেষক গোলাম মুরশিদ ও তাঁর স্ত্রী এলিজা মুরশিদ বই ছাপার জন্য তাগাদা দেন এবং বাংলাদেশের বন্ধু বিধান চন্দ্র পালকে স্বনামধন্য কোনো প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বই প্রকাশনার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন। বিধান তাঁর কথামতো বইটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যুক্ত থেকে প্রকাশের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বিধানের সহযোগিতা না পেলে বইটির প্রকাশ করা সম্ভবই হতো না। এই বইটি নির্মাণে অধ্যাপক পিনাকেশ সরকারের ভ‚মিকা নির্দেশক এবং অভিভাবকের। নানা বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিয়ে আমাকে সাহায্য করেছেন। তাঁর প্রতি আমার বিন¤্র শ্রদ্ধা। আমার স্বামী কবি পঙ্কজ সাহার নানা পরামর্শও যুক্ত হয়েছে এর সঙ্গে। সবার যৌথ প্রচেষ্টায় বইটি প্রকাশিত হলো। কাকে কৃতজ্ঞতা জানাব? সবাই ঘনিষ্ঠ আপনজন, সবাই মিলে কাজ করার আনন্দ উপভোগ করেছি। বইটির ভ‚মিকা লিখেছেন শিশু একাডেমির সাবেক অধিকর্তা লেখক শাহ্জাহান কিবরিয়া। তিনিও আমার নিকটজন। আর একজনের কথা না বললেই নয় শিশুসাহিত্যিক গবেষক আনসার-উল-হক। তিনিও নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। আর প্রকাশনা সংস্থার কথা না বললে সেটা অপরাধ হয়ে যাবে। বলামাত্র গ্রন্থিক প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী রাজ্জাক রুবেল বিধানের প্রস্তাবে নিজে উদ্যোগী হয়ে যত্ন সহকারে বইটি প্রকাশের দায়িত্ব সানন্দে গ্রহণ করেছেন। তার সমস্ত কৃতিত্বই বিধানের। বাকি রইল আমার শিশু-কিশোর পাঠকেরা। তাদের ভালো লাগলে আমার প্রচেষ্টা সার্থক মনে করব। আমার অনেক আদর ও ভালোবাসা।