সুলতানা শিরীন সাজি কবিতায় জীবন সাজাতে ভালবাসেন। জীবনের দুঃখ সুখের ছবি আঁকেন তিনি শব্দের জাদুতে। গাছ, পাখি, আকাশ, নদী, সমুদ্র আর মানুষ বারবার তার লেখায় ফিরে আসে সবুজ পাতার মত ঝিরঝির দোলায়, নদী, সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ঘুরেফিরে। শিরীন সাজি মনেপ্রাণে পাখি হতে চেয়েছেন, চেয়েছেন মানুষের জীবন ফেলে দূরভাসী নদী হতে। তাঁর কবিতায় প্রকৃতি এক দারুণ অনুষঙ্গ। আনন্দ আর বিষাদ নিষাদের ভিতর দিয়ে জীবনের নির্যাস আকণ্ঠ পান করেছেন কবি, ফলে তাঁর কবিতায় যে জীবনবোধ তা অনন্য হয়ে ফুটেছে। ভালবাসা! একমাত্র ভালবাসাতেই পৃথিবী থেকে দূর হতে পারে সমস্ত বৈরীতা, দ্বন্দ্ব আর বিভেদ! ঝিমলী এবং বালিহাঁস কবিতায় কবি ঝিমলীকে নদী বলছেন আবার বিরহ বলছেন। বালিহাঁসকে বলছেন দুঃখ। এই যে বিরহ এবং দুঃখ আছে তবু ভালোবাসা কিন্তু অনিবার। ভালোবাসা বয়ে চলছে জন্ম থেকে জন্মান্তরে। মানুষ থেকে মানুষে! জীবনের স্বভাব হলো নদীর মত বয়ে চলা! রেলগাড়ির মত পু ঝিকঝিক করে দৃশ্যের পর দৃশ্য পেরিয়ে ছুটে যাওয়া! বেঁচে থাকলে জীবনের এই চলার আনন্দ মূর্ত হয়। চোখেতে চুমুর দাগ জল ছুঁইছুঁই' কিংবা 'চোখ ভর্তি জলের চিঠি জমানো, তাকালেই যদি হুড়মুড় করে বেড়িয়ে পড়ে শব্দবৃষ্টির দল' অথবা 'জানতে চাও, চোখের নদীতে কি করে সুনামী হয়?' এইসব অনন্ত প্রশ্নের মত কবিতার চরণ এসে ধরা দেয় চোখের ক্যামেরায়। মন আঁকে ছবি।